পর্যায়বৃত্ত
পর্যায়বৃত্ত
শব্দের অর্থ একটি নির্দিষ্ট সময় পর পুনরাবৃত্ত বা বাড়ে বাড়ে পূর্বের অবস্থায় ফিরে
আসা । পর্যায়বৃত্ত দুই ধরণের হতে পারে । যথাঃ
1.    
স্থানিক পর্যায়বৃত্ত ।
2.    
কালিক পর্যায়বৃত্ত ।
স্থানিক
পর্যায়বৃত্তঃ
কোন
নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর যদি কোন কিছুর পুনরাবৃত্ত হয় তখন এই ধরণের পর্যায়বৃত্তকে
বলা হয় স্থানিক পর্যায়বৃত্ত । যেমনঃ টাইলস লাগানো মেঝেতে টাইলসের মাঝে ফাঁকা দাগ
গুলো একটি টাইলস পর পর পুনরাবৃত্ত হয় ।
কালিক
পর্যায়বৃত্তঃ
কোন
নির্দিষ্ট সময় পর পর যদি কোন ঘটনার পুনরাবৃত্ত হয় তবে এ ধরণের পর্যায়বৃত্তকে বলা
হয় কালিক পর্যায়বৃত্ত । যেমনঃ প্রতি এক মিনিট পর পর ঘড়ির সেকেন্ডের কাঁটা 12 টার
ঘর অতিক্রম করে ।
পর্যায়বৃত্তিক
গতি এবং পর্যায়কাল
কোন গতি সম্পন্ন
বস্তুর গতি যদি এমন হয় যেন, এটি এর গতি পথের একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট
সময় পর পর একই দিক থেকে অতিক্রম করে । অর্থাৎ বস্তুর গতির পুনরাবৃত্তি ঘটে । তবে এ
ধরণের গতিকে বলা পর্যায়বৃত্তিক গতি । আবার যে নির্দিষ্ট সময় পর পর এর গতির
পুনরাবৃত্তি ঘটে সেই সময়কে বলা হয় উক্ত গতির পর্যায়কাল । যেমনঃ ঘড়ির মিনিটের কাঁটা
প্রতি এক ঘণ্টা পর পর ১২ টার ঘরকে একই দিক থেকে অতিক্রম করে । তাই এটি একটি
পর্যায়বৃত্তিক গতি  এবং এই গতির পর্যায়কাল
১ ঘণ্টা ।
সরল
দোলকের গতি বা সরল ছন্দিত গতি বা সরল দোলন গতি
চিত্রে একটি সরল
দোলক দেখানো হয়েছে । এখানে সুতার প্রান্তে যে গোলকটি বাঁধা হয়েছে তাকে বব বলা হয় ।
যেহেতু এটি একটি সুষম গোলক তাই আমরা বলতে পারি, এর সমগ্র ভর কেন্দ্রে কেন্দ্রীভূত
আছে বা এর ভর কেন্দ্র কেন্দ্রে অবস্থিত । এখন যদি বলা হয়, সুতা বাঁধার প্রান্ত এবং
ঝুলানো ভরের মধ্যবর্তী দূরত্ব কত ? এই দূরত্ব হবে, সুতায় বাঁধা প্রান্ত
A বিন্দু থেকে ববের কেন্দ্র পর্যন্ত । যাকে আমরা কার্যকর
দৈর্ঘ্য বলি । তাহলে দাঁড়াল,
সরল দোলকের কার্যকর দৈর্ঘ্য



















সুতার দৈর্ঘ্য + ববের
ব্যাসার্ধ

চিত্রে সরল
দোলকটির ববটিকে যদি তুমি এর সাম্যবস্থা থেকে
Aএর
দিকে টান তাহলে দোলকটি নিজে অভিকর্ষের দরুন ববটিকে সাম্যবস্থার দিকে টানবে ।
Aএর দিকে সরণ যত বাড়বে, সাম্যবস্থার দিকে এর টান তত বেড়ে যাবে । ফলে এটিকেA এর দিকে টানা বন্ধ করে দিলে এটি সাম্যবস্থা বাO বিন্দুর দিকে ফিরে আসতে শুরু করবে । কিন্তু ফিরে আসার গতিশক্তিতে এটি আবার
বিপরীত
B বিন্দুতে যেতে আরম্ভ করবে ।B বিন্দু থেকেO এর দিকে যাত্রা করে আবারA তে যাবে । এভাবে সরল দোলকটিA থেকেB এর মধ্যে
দোল দিতে থাকবে । দোলকটি O থেকে যাত্রা করে A তে পৌঁছাবে তারপর আবার AOB পথেB তে পৌঁছাবে এবং O তে ফেরত আসবে । তাহলে এর একটি পূর্ণ পর্যায়
সম্পন্ন হবে । এই পর্যায়ে তার যে পরিমাণ সময় ব্যয় হয় তাকে বলা হয় সরল দোলকটির পর্যায়কাল
। তাহলে দাঁড়াল, পর্যায়কালের অর্ধেক সময় এটি OA বরাবর এবং বাকি
অর্ধেক সময় এটি
OB বরাবর চলে ।
লক্ষ কর, যখন দোলকটি O থেকে A এর দিকে
যায়, তখন অভিকর্ষ ববটিকে A থেকে O এর দিকে টানবে । দোলকটির 
বরাবর সরণ যত বেশি হবে, এই টান

 বরাবর তত বেশি হবে । তাহলে আমরা
বলতে পারি, ববের উপর প্রযুক্ত বল সরণের সমানুপাতিক কিন্তু দিক বিপরীত মুখী । 

উপরোক্ত বৈশিষ্ঠের উপর ভিত্তি করে আমরা সরল
দোলন গতিকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারি, যদি কোন দোলনরত কণার গতি এমন হয় যেন এটি
দোলন কালের অর্ধেক সময় একটি নির্দিষ্ট দিকে এবং বাকি অর্ধেক সময় তার বিপরীত দিকে
চলে তবে তার গতিকে বলা হয় সরল দোলন গতি বা সরল ছন্দিত গতি ।

লেখক
জিওন আহমেদ

Leave a Reply