নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র হতে আমরা জানি, যেকোন ধরণের সংঘর্ষের ক্ষেত্রে যেমন- দুইটি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষের ক্ষেত্রে সংঘর্ষের আগে এদের মোট ভরবেগ এবং সংঘর্ষের পরে এদের মোট ভরবেগ একই হবে । অর্থাৎ এদের ভরবেগ সংরক্ষিত থাকবে । কিন্তু স্থিতিস্থাপক এবং অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ হল দুইটি বিশেষ ধরণের সংঘর্ষ ।

স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ

সংঘর্ষের ক্ষেত্রে সংঘর্ষে অংশগ্রহণকারী বস্তুগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের আগে মোট গতিশক্তি এবং সংঘর্ষের পরে মোট গতিশক্তি সমান হলে সেই সংঘর্ষকে আমরা বলি স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ । যেমন আমরা যদি বলি, ১০০ জুল এবং ১৫০ জুল গতিশক্তি নিয়ে গতিশীল দুইটি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ ঘটল । এখন সংঘর্ষ ঘটার পর এদের গতিশক্তি ১৩০ জুল এবং ১২০ জুল । এখানে সংঘর্ষের আগে মোট গতিশক্তি ২৫০ জুল এবং পরেও শক্তি ২৫০ জুল । যেহেতু এদের মধ্যে গতিশক্তি সংরক্ষিত আছে তাই এই সংঘর্ষকে আমরা বলব স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ ।

অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ

সংঘর্ষের ক্ষেত্রে সংঘর্ষে অংশগ্রহণকারী বস্তুগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের আগে মোট গতিশক্তি এবং সংঘর্ষের পরে মোট গতিশক্তি সমান না হলে বা কম হলে সেই সংঘর্ষকে আমরা বলি অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ । যেমন আমরা যদি বলি, ১০০ জুল এবং ১৫০ জুল গতিশক্তি নিয়ে গতিশীল দুইটি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ ঘটল । এখন সংঘর্ষ ঘটার পর এদের গতিশক্তি ৮০ জুল এবং ১২০ জুল । এখানে সংঘর্ষের আগে মোট গতিশক্তি ২৫০ জুল হলেও পরেও শক্তি ২০০ জুল । অর্থাৎ ৫০ জুল শক্তির অপচয় ঘটেছে । যেহেতু এদের মধ্যে গতিশক্তি সংরক্ষিত নেই, তাই এই সংঘর্ষকে আমরা বলব অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ ।

প্রকৃত পক্ষে আমাদের বাস্তব জীবনের সকল সংঘর্ষই অস্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ । কারণ যেকোন সংঘর্ষ ঘটলে সেখানে শব্দ, তাপ ইত্যাদি উৎপন্ন হয় । আর এসবই শক্তি । আর এই শক্তি উৎপন্ন হয় গাড়ি দুইটির গতিশক্তি থেকে । এখানে গাড়ির গতিশক্তির কিছু শক্তি খরচ হয়ে যায় । তাই সংঘর্ষের পরের গতিশক্তি আগের গতিশক্তির তুলনায় কম হয় ।

Leave a Reply