সাপে নেউলে (বেজি ) সম্পর্ক নিয়ে জন শ্রুতি খুবই প্রচলিত । কিন্তু গবেষকদের কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার এটাই যে কি উপায়ে বেজিরা নিজেদেরকে সাপের বিষ থেকে সুরক্ষিত রাখে ? নিউ সাইন্টিস্ট পত্রিকায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বেজির দেহে বিশেষ কিছু গ্রাহক কোষই এর জন্য দায়ী। সাধারণত সাপের বিষে আলফা – নিউরোটক্সিন থাকে যা প্রাণঘাতী হয়। এই অধিবিষ যে কোনো প্রাণীর দেহের গ্রাহক কোষের উপর অ্যাসিটায়িল কোলাইন অনুগুলির সঙ্গে নিজেদের সংযুক্ত করে ফেলে। এদিকে গ্রাহক কোষগুলিতে ওই অ্যাসিটায়িল কোলাইন নামক রাসায়নিক পদার্থ থাকার জন্য স্নায়ু থেকে অনুভূতি বহনে ও পেশির চলনে সহায়তা করে। কিন্তু সাপ কামড়ানোর সময় তার বিষের ওই আলফা – নিউরোটক্সিন, স্নায়ু থেকে পেশিতে সংবাদ প্রেরণের কাজে বাধা দেয়। ফলে ক্রমশই পেশি নিস্তেজ হয় আর শিকারটির মৃত্যু ঘটে ।

তবে ব্যতিক্রম হলো বেজি । যেকোনো অন্যান্য প্রাণীর (যেমন ইঁদুর) দেহের গ্রাহক কোষ অপেক্ষা বেজির দেহের কোষের গ্রাহক কোষের অভ্যন্তীণ গঠন পৃথক হয়। ঠিক এই পার্থক্যের জন্যই সাপেরাও তাদের নিজের বিষে মারা যায় না।

ইসলরায়েলের Weirmonn Institute এর Immunology বিভাগের এক বিজ্ঞানী সাপের বিষের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করেন এবং বেশির দেহেরও সংবেদী গ্রাহক কোষের আণবিক গঠনের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে এক চমকপ্রদ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেন । দেখা যায় যে বেজির দেহের গ্রাহক কোষের গঠন এমনই যে তাতে কোনোভাবেই সাপের বিষের কোনো রাসায়নিক প্রভাব পড়তে পারে না। তাই বেজির দেহে স্নায়বিক ক্রিয়ার কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। অর্থাৎ বেজির মৃত্যু ঘটার কোনো কারণ নেই । এটা মনে করা যায় যে বিবর্তনের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেজির এ জাতীয় কোষের গঠনের এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে।

Leave a Reply