আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহ

কোন তার কুণ্ডলীর পাশে একটি চুম্বককে গতিশীল করলে, গতিশীল চুম্বকের দরুন তার কুণ্ডলীতে তড়িচ্চালক শক্তি আবিষ্ট হয় । কুণ্ডলীর পাশে চুম্বকের গতির জন্য তার কুণ্ডলীতে প্রাপ্ত তড়িৎ প্রবাহকে আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহ বলে ।

লেঞ্জের সূত্র

তার কুণ্ডলীতে আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহের দিক নির্ণয়ের জন্য বিজ্ঞানী লেঞ্জ একটি সূত্র প্রদান করেন। এটিই লেঞ্জের সূত্র নামে পরিচিত। এই সূত্রটিকে তাড়িতচৌম্বক আবেশের তৃতীয় সূত্রও বলা হয়। সূত্রটি হচ্ছে– “যে কোন তড়িৎচৌম্বক আবেশের ক্ষেত্রে আবিষ্ট তড়িচ্চালক শক্তি বা তড়িৎ প্রবাহের দিক এমন হয় যেন, এটি তার সৃষ্টি হওয়া মাত্রই যে কারণে সৃষ্টি হয়েছে সেই কারণকেই বাঁধা দেয়।”

অন্যভাবে বললে, “আবিষ্ট তড়িচ্চালক বল বা প্রবাহের দিক এমন হয় যেন, এটি এর সৃষ্টিকারী সকল প্রকার কারণের বিরোধিতা করবে বা সকল প্রকার কারণকেই বাঁধা দেবে।” সূত্রের গাণিতিক রূপ হল:

লেঞ্জের সূত্র এবং শক্তির নিত্যতা

তাড়িতচৌম্বক আবেশের ফলে আমরা দেখতে পাই যে, কোনও বদ্ধ কুণ্ডলীতে তড়িচ্চালক শক্তির উৎস ছাড়াই তড়িৎ প্রবাহ উৎপন্ন হচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে এটি শক্তির নিত্যতার সূত্রের ব্যতিক্রম বলে মনে হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাড়িতচৌম্বক আবেশে শক্তির নিত্যতা সূত্র বিরোধী কোন ঘটনা ঘটে না। লেঞ্জের সূত্র থেকে আমরা এটি প্রমাণ করতে পারি। 

লেঞ্জের সূত্র থেকে আমরা জানি, কোনও কুণ্ডলীতে আবিষ্ট তড়িচ্চালক শক্তি এর সৃষ্টির কারণকেই বাধা দেয়। কোনও কুণ্ডলী ও চুম্বকের মধ্যবর্তী আপেক্ষিক গতির জন্য কুণ্ডলীতে আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহের উদ্ভব হয় যা ঐ আপেক্ষিক গতিকে বাঁধা দেয়। সুতরাং ঐ গতি বজায় রাখার জন্য সর্বদা কিছু যান্ত্রিক শক্তি ব্যয় করতে হয়। এই যান্ত্রিক শক্তিই তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে কুণ্ডলীতে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি করে। সুতরাং তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া শক্তির নিত্যতা সূত্র মেনে চলে।

Leave a Reply