অনেকের মনেই এমন প্রশ্ন আসে, আকাশ থেকে যে শিলাবৃষ্টি পড়ে সেখানে বরফের টুকরোগুলো কিভাবে তৈরি হয় ? আবার আকাশে যদি এগুলো এত শক্ত অবস্থায় থাকে, তাহলে এগুলো প্লেনের সাথে ধাক্কা খায় না কেন ?

মেঘ হল ঘনীভূত জলীয়বাষ্প । নদী বা সাগরের পানি সূর্যের তাপে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয় । জলীয় বাষ্প বাতাসের চেয়ে হালকা হওয়ায় তা উপরের দিকে উঠতে থাকে । এরপর সেগুলো একত্রিত হয়ে মেঘের সৃষ্টি করে । এরা বাতাসের সাথে একজায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যায় । আবার এই জলীয়বাষ্প উপরে উঠে তাপ হারিয়ে পানিতে পরিণত হয় । তখন এসব পানি বৃষ্টি হিসেবে মাটিতে পড়ে । শিলাবৃষ্টি হয় প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ার পর । কারণ আবহাওয়া বেশি গরম হলে, জলীয়বাষ্পের কণাগুলোর পারস্পরিক দূরত্ব আরও বাড়তে থাকে । ফলে জলীয়বাষ্প বেশি হালকা হয়ে যায় । সাধারনের তুলনায় বেশি হালকা হওয়ায় অনেক দ্রুত গতিতে এরা উপরে উঠতে থাকে । দ্রুত গামী এই বাষ্প মেঘ হয়ে বায়ুমণ্ডলের এমন স্তরে পৌঁছে যায় যেখানে তাপমাত্রা খুবই কম ।

শিলাবৃষ্টির বরফ

এভাবে জলীয়বাষ্প বা মেঘ যখন বায়ুমন্ডলের অত্যন্ত শীতলতর স্থানে প্রবেশ করে তখন জলীয়বাষ্পের কণা থেকে পানি এবং পানির কণাগুলো ধীরে ধীরে বরফে পরিণত হয় । একপর্যায়ে এই বরফের টুকরোগুলো বৃষ্টির সাথে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয় । মুলত এটাই শিলাবৃষ্টি । আকাশে বরফগুলো অনেক বড় থাকলেও নিচে পড়তে পড়তে এগুলো গলে ছোট হয়ে যায় । ফলে আমরা শিলাবৃষ্টিতে যে বরফ দেখি, তা আকারে অনেক ছোট হয় ।

এখন ঝড় বৃষ্টি যাই হোক না কেন, সেটা হয় মেঘ ও পৃথিবীপৃষ্ঠের মাঝামাঝি অঞ্চলে । তাই কোন বিমান চলন্ত অবস্থায় ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে বিমানটি মেঘের ওপরে উঠে যায় । সেখানের বাতাসে যদিও ঝড় বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকে তবে সেটা কম । তাই সাধারণ ঝড় বা শিলাবৃষ্টির মধ্যে চলাচল বা উড্ডয়ন-অবতরন করতে বিমানের তাই তেমন বেগ পেতে হয় না ।

জিওন আহমেদ
চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ

Leave a Reply