কঠিন, তরল এবং গ্যাস পদার্থের এই তিনটি ভিন্ন অবস্থা সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি । কিন্তু এই তিন অবস্থার বাইরেও পদার্থের চতুর্থ আরেকটি অবস্থা হতে পারে, এর নাম প্লাজমা। আমরা জানি অণু কিংবা পরমাণুর নিউক্লিয়াসে যে কয়টি পজিটিভ চার্জের প্রোটন থাকে তার বাইরের ঠিক একই পরিমাণ নেগেটিভ চার্জের ইলেকট্রন থাকে। সে কারণে একটা অণু কিংবা পরমাণুর সম্মিলিত চার্জ নিরপেক্ষ বা শূন্য হয়। কিন্তু আমরা চাইলে ইলেকট্রন নিয়ে বা অতিরিক্ত ইলেকট্রন নিয়ে যেকোন পরমাণুকে ঋণাত্মক বা ধনাত্মক আধানে আহিত করতে পারি । এদেরকে আমরা আয়ন বলি । প্লাজমা হচ্ছে আয়নিত গ্যাস যেখানে মুক্ত ইলেকট্রন এবং ধনাত্মক আয়নের সংখ্যা প্রায় সমান।

প্রচণ্ড তাপ দিয়ে গ্যাসকে প্লাজমা করা যায় । এমনকি শক্তিশালী বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র প্রয়োগ করেও প্লাজমা তৈরি করা যায়। বাসাবাড়িতে টিউবলাইটের ভেতর প্লাজমা তৈরি হয়। নিওন লাইটের যে উজ্জ্বল বিজ্ঞাপন দেখা যায় সেগুলোর ভেতরেও প্লাজমা থাকে। বজ্রপাত হলে যে বিজলির আলো দেখা যায় সেটিও প্লাজা আবার দূর নক্ষত্রের মাঝে যে পদার্থ সেটিও প্লাজমা অবস্থায় আছে। আমরা বর্তমানে ফিশান পদ্ধতিতে ভারী নিউক্লিয়াসকে ভেঙে নিউক্লিয়ার শক্তি ব্যবহার করে থাকি। হালকা নিউক্লিয়াসকে একত্র করে ফিউশান পদ্ধতিতে শক্তি তৈরি করার জন্য প্লাজমা ব্যবহার করার চেষ্টা করা হয় এবং এটি এখন পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। 

Leave a Reply