মানুষের ডাকে প্রকৃতি সারা না দিলেও প্রকৃতির
ডাকে মানুষ সারা না দিয়ে থাকতে পারেনা । কারণ মানুষের অস্তিত্বের সূচনা হয়েছে এই
প্রকৃতি থেকেই । প্রকৃতির মৌলিক উপাদান গুলোর সমন্বয়ের নামই মানুষ নামক এই জীব ।
প্রকৃতি বারবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । আমরা এর উপর বারবার চালিয়েছি অমানসিক অত্যাচার
। তবুও যতটুকু অস্তিত্ব টিকে থাকে, প্রকৃতি সেইটু
কু দিয়েই আমাদেরকে রক্ষা করে
চলেছে । শত শত প্রাকৃতিক দূর্যোগে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে আমাদের রক্ষা করেছে । শুধু তাই
নয় । আমাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এবং চিকিৎসা এই চারটি মৌলিক চাহিদার যোগান
দিয়ে আমাদের আমাদের অস্তিত্বকে সুনিশ্চিত করে তুলেছে । সে কখনও আমাদের উপর অভিমান
করেনি । আমাদেরকে কখনও পরীক্ষায় ফেলেনি । নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে আমাদের রক্ষাই তার
একমাত্র উদ্দেশ্য ।

বেঁচে থাকার জন্য মানুষের প্রধান যে জিনিসটি
প্রয়োজন, তা হল-আনন্দ । বলা হয়ে থাকে, যদি একজন মানুষের মন সুস্থ থাকে তবে তার ৮০%
শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত হয়ে যায় । আমাদের এই হাসি আনন্দের খোরাক এই প্রকৃতি ।
ছুটি পেলেই কাজের ক্লান্তি দূর করার জন্য আমরা ছুটে যাই প্রকৃতির কাছে । নিমিষেই
সকল ক্লান্তি দূর করে আবারও কাজে ঝাপিয়ে পরি নতুন উদ্যমে । আমরা হাফিয়ে যাই না,
ক্লান্ত হইনা । কারণ আমরা প্রকৃতির এক পলতে হাঁসিতেই পূর্বের সমান সতেজতা ফিরে পাই

সেখানে বাংলাদেশ আমাদের জন্য আর এক নতুন
উপহার । ছয় ঋতুর আমাদের এই দেশে প্রতি ২মাস পরপর নতুন রুপে সাঁজে । আমাদেরকে দেয়
নতুন সজিবতা, নতুন হাওয়া, এক নতুন আবহাওয়া । বিরক্তি আমাদেরকে স্পর্শ করতে পারেনা
। কারণ, প্রকৃতি আমাদের ৬টি পরিবর্তন উপহার দেয় । এখানে যেমন বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস এলেই
শুরু হয় ঝড়-বৃষ্টি । তেমনি প্রকৃতিতে ফলে নতুন নতুন ফুল-

ফল । আম, কাঠালে মেতে উঠি
আমরা । চারদিকে নতুন ধানের গন্ধ আমাদেরকে মুগ্ধ করে । কৃষকের মুখে হাঁসি । আ
বার
ফসলের জন্য ঝড়বৃষ্টির ভয় । দিন শেষে সোনার ফসল ফিরে পাবার মলিন হাঁসি ।
আষাঢ়-শ্রাবণ আসলেই দিনভর বৃষ্টি । কৃষকের চিন্তা নেই । কারণ তার ফসল ঘরে উঠেছে ।
সবাই মেতে ওঠে নতুন ফসল রোপণের আনন্দে । মানুষের ব্যাস্ততা কমে না । কারণ তারা জানে
প্রকৃতির কোন পরিবর্তনই তাদের প্রতিকূলে দাঁড়ায় নি । তাদের মুখে হাঁসি ফোঁটাতেই
প্রকৃতি এই রূপ নিয়েছে ।

বর্ষার নতুন পানি পেয়ে গাছপালারা নতুন করে
জেগে ওঠে । ফলে হাজারো ফসল । শরত, হেমন্ত, শীত এবং বসন্ত এদের পরিবর্তন আমাদের অবসা

আসতে দেয় না । আমরা তাই কোন কিছুর প্রতি বি
রক্ত হইনা । কোন পরজীবী আমাদের কাছে
টিকে থাকতে পারেনা । কারণ পরিবর্তন আমাদের খোরাক হলেও তাদের শত্রু । তারা এতে টিকে
থাকতে পারেনা ।

সুযোগ পেলে আমরা আরও নতুন সৌন্দর্যকে আমন্ত্রণ
জানাতে পারি । নিজের অবসরে ঘুরে আসতে পারি, কক্স বাজার সমুদ্র সৈকত, সিলেট চা
বাগান, বান্দরবান জায়গা থেকে । এসব যেন আমাদের জন্যই, আমাদের হাঁসি দেখতেই নতুন
রুপে সেজেছে । এদেশের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিমে রয়েছে এমন শতশত লীলাভূমি । যা
আমাদের শুধুই যে মুগ্ধ করে, তা নয় । আমাদের সজিবতাকে উজ্জীবিত করে । শত কষ্টের
মাঝেও আমাদের মুখে হাঁসি ফোটায় । আমাদের জ্ঞান বিজ্ঞানেরও খোরাক এই অক্লান্ত
প্রকৃতি ।

এত সবকিছুর জন্যই হয়তো আমাদের এই প্রিয়
মাতৃভূমিটিকে এত বেশি ভালবাসি । এত বেশি ফিরে আসি । এটাই তো আমাদের প্রিয়
মাতৃভূমি, আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ ।

 

লেখক

জিওন আহমেদ

Leave a Reply