যুগে
যুগে এবং আশেপাশে যখন বিভিন্ন মতাদর্শের কিংবা চিন্তা ধারার মানুষ আমরা দেখে থাকি,
তখন একজন বিজ্ঞান সচেতন ব্যাক্তির মনে প্রশ্ন আস্তেই পারে- মনোজগতে বা চিন্তার
জগতে কি পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ন্ত্রণ আছে ? নাকি নেই ?

এই প্রশ্নের
উত্তর পাওয়ার জন্য বিজ্ঞানের সংজ্ঞা আবারও নতুন করে স্মরণ করতে হবে । বিজ্ঞান অনেক
কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ঠিকই, কিন্তু বিজ্ঞানের সংজ্ঞায় আরও একটি কথা আছে । তা
হল- বিজ্ঞান প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করে । সেটা হতে পারে যুক্তিতর্কে কিংবা তাত্ত্বিকভাবে
। তাই মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে বিজ্ঞানের নিয়ন্ত্রণ থাকা না থাকার উপর বিজ্ঞানকে কখনও
সীমাবদ্ধ করে দেয়া সম্ভব নয় । তবে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে বিজ্ঞানের জানার পরিধি নিয়ে
প্রশ্ন করা অবশ্যই যুক্তিযুক্ত ।

আমাদের
বাহ্যিক কিংবা অভ্যন্তরীণ জীবনে সকল কার্যকলাপ কিংবা পরিণতিতে কারণ এবং ধারাবাহিকতা
বজায় থাকে । কাজেই কোন ঘটনা ঘটলে আমরা তার পিছনের কারণ উতঘাটন করতে উদ্যোত হতে
পারি । সেটা হতে পারে, কোন ঘটনায় আপনার উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি কিংবা হস্তক্ষেপ ।
অথবা সেটা নিয়ে আপনার ভাবনা চিন্তা । আপনি চাইলে সেটাতে পরিবর্তন আনতে পারবেন । তবে
সেক্ষেত্রে নতুন এক কারণ আপনাকে সৃষ্টি করতে হবে । আর কারণ সৃষ্টির পিছনে আছে আপনার
মনস্তাত্ত্বিক চিন্তা ।

স্বভাবতই
আপনি টানা কয়েকদিন যদি হিটলারের জীবনের ইতিবাচকতা নিয়ে ভাবেন, আপনি হিটলারকে
ইতিবাচক হিসেবেই উপস্থাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন । উল্টোটিও সত্য । তবে আপনি
কোনটা চিন্তা করবেন, চিন্তা করবেন নাকি করবেন না সেটার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান আপনার
জ্ঞান এবং পরিপার্শ । পরিপার্শের সাথে আবার অন্তর্ভুক্ত আছে, পরিপার্শের অন্যদের
সেইসব বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ।

সুতরাং
আপনি যদি যদি যুক্তি দিয়ে আপনার মনোজগতকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান, সেটাও করতে পারেন । আবার
যদি পরিপার্শের সাথে সামজ্জস্য রেখে চলতে চান, আপনি সেটাও করতে পারেন । বিজ্ঞান সে
বিষয়ে হস্তক্ষেপ কিংবা নিয়ন্ত্রণ করবেনা । তবে বিজ্ঞান আপনাকে ভাবতে কিংবা সত্য উতঘাটনে
সাহায্য করতে পারে ।

জিওন আহমেদ

Leave a Reply