২০২২ সাল
নাগাদ দুটি তারার সংঘর্ষ হতে যাচ্ছে
, যেটা খালি চোখে দেখা যেতে পারে।

রেড নোভা স্টার
দুটি তারার
সংঘর্ষ হবে আর পৃথিবী থেকে সেটা খালি চোখে দেখা যাবে। আসছে ২০২২ সাল বা তার এক দুই
বছরের ভেতরে এটি ঘটার সম্ভবনা আছে বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন। এসময় তারা গুলোর
উজ্জ্বলতা বর্তমানের চেয়ে প্রায় ১০
,০০০ গুণ বেড়ে যাবে।
মানে হল এটি কিছু দিনের জন্য আকাশের অন্যতম উজ্জ্বল তারা হবে। এই সংঘর্ষের কথা
সর্বপ্রথম ২০১৫ সালে প্রফেসর ল্যারী মলনার ও তার ছাত্র ক্যারেন কাইনেমুচি ও হেনরি
কবুলনিকি ভবিষ্যৎ বানী করেন। মলনার সেই ২০১৩ সাল থেকে তারা
KIC 983227 কে পর্যবেক্ষণ করছেন। কিছুদিন পরে কাইনেমুচি তারাটির উজ্জ্বলতার
পরিবর্তন দেখতে পান। এতে তিনি বুঝতে পারেন যে তারাটি হয় পালস করছে বা তারাটি আসলে
বাইনারী স্টার সিস্টেমে আছে। বাইনারী স্টার
সিস্টেম এমন একটি সিস্টেম যে সিস্টেমে দুটি তারা একটি আরেকটিকে
প্রদক্ষিণ করে।
কেপলার
স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহার করে তারা তারাটির অরবিটাল পিরিওড সম্পর্কে জানতে পারে। এই
সময় তারা বুঝতে পারে যে তারা দুটি নিজেদের প্রদক্ষিণ করতে আগের চেয়ে কম সময় নেয়।
তারপর তারা তারাটি
গত পনের বছরের ডেটা সংগ্রহ করে
এবং বুঝতে পারে কি হচ্ছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানী রোমল্ড টাইলেন্ডা এই ব্যাপারটি আগেই
নথিভুক্ত করেছিলেন। তার গবেষণা ছিল তারা
V1309 স্করপি নিয়ে।
২০০৮ সালে হঠাত করে
V1309 স্করপি রেড নোভায় বিস্ফোরিত হয়।
রোমল্ডের গবেষণায় দেখা যায় যে বিস্ফোরণের আগে
V1309 স্করপিরও অরবিটাল পিরিওড কমতে থাকে।
মলনার সংবাদ
সম্মেলনে বলেন এমন ঘটনা হয়ত মিলিয়ন বারে একবার দেখার সুযোগ হয়। তিনি সবার সামনে
তার গবেষণার সারমর্ম তুলে ধরেন। তার গবেষণা
“KIC 9832227র রেড নোভা
হবার সম্ভবনা
নামে দ্য এস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে জমা দেয়া
হয়েছে
, কিন্তু এখনও প্রকাশিত হয়নি। মলনার ও তার দল দুটি
পরীক্ষা চালান অন্য কোন মহাজাগ
তিক
ঘটনা তারা দুটি ঘটাচ্ছেনা এটা প্রমাণ করার জন্য। বর্ণালীমিতি বা স্পেক্ট্রোস্কোপিক
পরীক্ষা থেকে বোঝা যায় যে তাদের অরবিটাল পিরিওড ১৫ বছরের কম। তারা এটাও দেখান যে
যে হারে অরবটাল পিরিওড কমছে তাতে তারা দুটি সংঘর্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সারকথা হল আমাদের মারজিং স্টার তত্ত্ব
শক্তভাবে নেবার সময় এসেছে। এটা নিয়ে আমাদের আগামী কিছু বছর ব্যাপক গবেষণা করা
দরকার। তাতে আমরা তারা দুটি যদি বিস্ফোরিত হয় তবে কেন হল তা জানতে পারব
বলেন মলনার। মলনার ও তার দলKIC 9832227 কে
আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করা অব্যাহত রাখবেন। যদি ভবিষ্যৎ বানী সত্য হয় তবে বিজ্ঞানীরা
প্রথমবারের মত বাইনারী
স্টার
সিস্টেমের ধ্বংস দেখবেন।
চিত্রেলাল
বৃত্ত চিহ্নিত স্থানে তারা দুটির অবস্থান।

ক্যালভিন কলেজ মিশিগানর ম্যাট ওআলহট
বলেন
যদি মলনারের ভবিষ্যৎ বানী সত্য হয় তবে তার কাজ
প্রথমবারের মত দেখালো যে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মরতে বসা বাইনারী সিস্টেমকে ডিটেক্ট
করতে পারেন এবং তাদেরকে ধ্বংসের আগে পর্যবেক্ষণ করা যায়। এই গবেষণাটি শুধু
বৈজ্ঞানিক ফলাফলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়
, সাধারণ মানুষ
যারা কল্পনার জগতে এসব দেখেন তাদের কল্পনাও সত্য হবে। এটা যদি সত্য হয় তবে বাবা-মা
তাদের বাচ্চাদের আকাশের একটা জায়গা দেখিয়ে বলতে পারবে
দেখো
বাচ্চারা ঐ খানে অনেক উজ্জ্বল একটা তারা কয়েকদিন পর জ্বলে উঠবে। যদি এটি বিস্ফোরিত
হয়ই
, তবে এটা উজ্জ্বলতার মাত্রায় দ্বিতীয় মাত্রার হবে।
তার মনে হল এটি খালি চোখে দেখা যাবে কিন্তু শহর এলাকা থেকে সহজে দেখা যাবেনা।
আলোকদূষণের জন্য এমন হবে। এক্ষেত্রে বিনকিউলার ব্যবহার করা যেতে পারে।

তত্থ্য সংগ্রহ
জিওন আহমেদ
তড়িৎ ও তড়িৎ কৌশল বিভাগ
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

This Post Has One Comment

Leave a Reply