বস্তুকে পাল্লায় তুলে আমরা তার ভর নির্ণয় করতে পারি । বস্তুর সময়ের সাথে সরণের হার মাপলেই আমরা এর বেগ পেয়ে যাই । এই ভর এবং বেগ নিয়ে আমরা বাস্তব জীবনের অনেক বিষয়কে ব্যাখ্যা করতে পারি । অনেক গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে পারি । ভর এবং বেগকে আলাদা আলাদাভাবে জানলেও ভরবেগ রাশিটার কেন প্রয়োজন হল ? আমরা তো ভর-সরণ ব্যবহার করিনা । বেগ ত্বরণ ব্যবহার করিনা । তবে ভরবেগ কেন ?

মনে করেন, একটি ট্রাক এবং একটি রিকশা একই বেগে যাচ্ছে । আপনাকে দুইটাকেই টেনে থামাতে বলা হল । কোনটি থামাতে বেশি বল প্রয়োগ করতে হবে ? নিশ্চয় ট্রাককে থামাতে বেশি বল প্রয়োজন হবে । কারণ উভয়ের বেগ একই হলেও ট্রাকের ভর বেশি আর তাই জড়তাও বেশি । এজন্যই একে থামাতে বা জড়তার পরিবর্তন করতে বেশি বল প্রয়োগ করতে হবে । অর্থাৎ কোন বস্তুর ভর বেশি হলে তার জড়তা বেশি হয় এবং তার জড়তার পরিবর্তন করতে বেশি বলের প্রয়োজন হয় ।

আবার ধরে নিচ্ছি দুইটি একই ভরের রিকশা ভিন্নি ভিন্ন বেগে যাচ্ছে । আপনাকে যদি রিকশা দুইটিকে থামাতে বলা হয়, তবে যে রিকশাটির বেগ বেশি, তাকে থামাতে বেশি বল প্রয়োজন হবে । কারণ উভয় রিকশার ভর সমান হওয়া সত্ত্বেও বেশি বেগ সম্পন্ন রিকশাটির গতি জড়তা বেশি হবে । এজন্যই একে থামাতে বা জড়তার পরিবর্তন করতে বেশি বল প্রয়োগ করতে হবে । অর্থাৎ কোন বস্তুর বেগ বেশি হলেও তার জড়তা বেশি হয় এবং তার জড়তার পরিবর্তন করতে বেশি বলের প্রয়োজন হয় ।

তাহলে আমরা দেখতে পারছি কোন বস্তুর জড়তার পরিমাণ বা জড়তা পরিবর্তনে বলের পরিমাণ নির্ভর করছে দুইটি রাশির উপর । তা হল- ভর এবং বেগ । আমরা যদি ভরবেগ রাশি দুইটিকে গুণ করি, যার নাম ভরবেগ । তবে আমরা সহজেই বা এক কথায় বলতে পারব- যার ভরবেগ বেশি তার জড়তা বেশি বা জড়তার পরিবর্তন করতে বেশি বল প্রয়োজন হবে । এরুপ কারণেই আমাদের ভরবেগ রাশিটার প্রয়োজন হল ।

Leave a Reply