একজন রসায়নের ছাত্রের জন্য পর্যায় সারণির মৌলগুলোর আচরণ এবং ধর্ম সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী । কিন্তু এখন পর্যন্ত পর্যায় সারণীতে ১১৮টি মৌল রয়েছে । এতগুলো মৌলের আচরণ এবং ধর্ম সম্পর্কে একইসাথে ধারণা অর্জন করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জের বিষয় । সমস্যা যেমন আছে, তার সমাধানও আছে । রসায়নবিদরা এই সমস্যার সমাধান করার জন্য মৌলগুলোর মধ্যে মিল খোঁজার চেষ্টা করলেন । তারা দেখলেন, মৌলগুলোর বেশকিছু ধর্ম পর্যায় সারণীর একই পর্যায়ের বাম থেকে ডানদিকে গেলে অথবা একই গ্রুপের উপর থেকে নিচের দিকে গেলে ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয় । এরা এমনভাবে পরিবর্তিত হয়, যাতে পরবর্তী অজানা মৌলটির সেই ধর্মের মান কত হবে তা বলে দেওয়া যায় । আর এটি তখনই সম্ভব, যখন আমরা মৌলগুলোকে পারমাণবিক সংখ্যার ভিত্তিতে সাজাই । যেহেতু আমাদের পর্যায় সারণিতে মৌলগুলোকে পারমাণবিক সংখ্যার ভিত্তিতে সাজানো, তাই পর্যায় সারণিতে মৌলগুলোর এসব পর্যায়বৃত্তিক ধর্ম লক্ষ করা যায় ।�

পর্যায় সারণি

পর্যায়বৃত্তিক ধর্ম কাকে বলে

পর্যায় সারণির একই পর্যায় বা গ্রুপের মৌলগুলোর পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে মৌলগুলোর যেসব ধর্ম ক্রমান্বয়ে পরিবর্তিত হয় সেসব ধর্মকে বলা হয় পর্যায়বৃত্তিক ধর্ম ।

মৌলের পর্যায়বৃত্তিক ধর্মগুলো কি কি ? 

মৌলের পর্যায়বৃত্তিক ধর্মগুলো হল-

১। পরমাণুর আকার
২। পরমাণুর যোজ্যতা
৩। আয়নীকরণ শক্তি
৪। ইলেকট্রন আসক্তি
৫। তড়িৎ ঋণাত্মকতা
৬। ধাতব ধর্ম
৭। গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক
৮। পরমাণুর ঘনত্ব

মৌলগুলোর এই পর্যায়বৃত্তিক ধর্মগুলোর মধ্যেও আবার নতুন একটি বৈশিষ্ট আছে । সেটি হল- এদের যেকোন ধর্মের মান যদি একই পর্যায়ের বাম থেকে ডান দিকে গেলে কমে, একই গ্রুপের উপর থেকে নিচের দিকে গেলে সেটি বাড়ে । আবার এদের যেকোন ধর্মের মান যদি একই পর্যায়ের বাম থেকে ডান দিকে গেলে বাড়ে, একই গ্রুপের উপর থেকে নিচের দিকে গেলে সেটি কমতে থাকে ।

আর এভাবে পর্যায়বৃত্তিক ধর্মের ভিত্তিতে মৌলগুলোর সম্পর্কে সহজেই অনেক বেশি ধারণা অর্জন করা সম্ভব, যা অন্য কোনভাবে সম্ভব নয় ।

Leave a Reply