তড়িচ্চালক শক্তি নিয়ে আমাদের সকলের জানা একটি সংজ্ঞা হল- কোন তড়িৎ উৎস এক কুলম্ব আধানকে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে উৎসসহ সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আবার ঐ বিন্দুতে আনতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয় তাকে ঐ উৎসের তড়িচ্চালক শক্তি বলে। কিন্তু এই সংজ্ঞাটি অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না । তাই তড়িচ্চালক শক্তিকে একটু সহজভাবে উপস্থাপন করছি ।

আপনি যদি সোজা এবং আনুভূমিক রাস্তায় একটি মার্বেল রাখেন, তবে মার্বেলটি তার নিজের অবস্থানেই বসে থাকবে । একটি সামনে কিংবা পিছনে যাবেনা । এবার যদি মার্বেলটিকে একটি ঢালু রাস্তায় রাখেন, তাহলে মার্বেলটি ঢালু রাস্তার উপর থেকে নিচের দিকে গড়িয়ে যেতে থাকবে । এখানে আপনি মার্বেলে বল প্রয়োগ করছেন না । মার্বেলটিতে আগে থেকে কোন বল প্রয়োগ করে রাখেন নি । কিন্তু তবুও মার্বেলটি গড়াচ্ছে । কারন তলটিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে আপনা থেকেই মার্বেলে বল প্রযুক্ত হয় । এখানে রাস্তা যত বেশি ঢালু হবে, মার্বেলে গড়িয়ে যাওয়ার জন্য ততবেশি বল প্রযুক্ত হবে ।

বর্তনীতে ব্যাটারী রাস্তার মতই ভূমিকা পালন করে । ব্যাটারির এক টার্মিনালে উচ্চ ধনাত্মক এবং অপর প্রান্তে সমান পরিমাণ ঋণাত্মক চার্জ দেওয়া হয় । ধনাত্মক চার্জ মানে ইলেকট্রন শুন্যতা । আর ঋণাত্মক চার্জ মানে ইলেকট্রনের আধিক্য । এই ভারসাম্যহীনতার কারণে ঋণাত্মক প্রান্ত হতে অধিক পরিমাণ ইলেকট্রন ধনাত্মক চার্জের দিকে চলতে থাকে । ব্যাটারির চার্জের পরিমাণ বা পার্থক্য যত বেশি হবে চার্জ তত অধিক গতিতে বর্তনী হয়ে ছুটতে থাকবে । এই যে ইলেকট্রনের উপর ব্যাটারি কতৃক বলটি প্রযুক্ত হচ্ছে, সেই বলতে আমরা বলে থাকি তড়িচ্চালক বল । অর্থাৎ তড়িচ্চালক বল হল এমন একটি বল, যা চার্জকে বর্তনী বেঁয়ে চলার জন্য ধাক্কা দেয় । 

This Post Has One Comment

  1. নামহীন

    কম শব্দে বেশ সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা রয়েছে।পড়ার পর তড়িৎচ্চালক বল সন্বন্ধে একটা স্পষ্ট ধারনা তৈরি হল।

Leave a Reply