তাড়িতচৌম্বকীয় তরঙ্গ

কম্পমান চার্জ থেকে নির্গত, পরস্পরের সাথে এবং তরঙ্গ সঞ্চালনের সাথে লম্বভাবে অবস্থিত, সমান কম্পাঙ্ক ও সমদশাসম্পন্ন তড়িৎক্ষেত্র তরঙ্গ ও চৌম্বকক্ষেত্র তরঙ্গ সমন্বয়ে গঠিত, শূন্য মাধ্যমে সঞ্চালনযোগ্য, অতি দ্রুত গতিসম্পন্ন তরঙ্গকে তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ বলে।

পয়েন্টিং ভেক্টর

কোনো তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ এর গতিপথের সাথে লম্ব একক ক্ষেত্রফলের মধ্য দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ শক্তি সঞ্চালিত করে ঐ শক্তির মান ও তার প্রবাহের দিককে একত্রে পয়েন্টিং ভেক্টর বলে।

আলোকবর্ষ

আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে এক আলোকবর্ষ বলে। এক আলোকবর্ষ = 9.46 * 10 ^ 12 * কি.মি.

তাড়িতচৌম্বক বর্ণালি

সব তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের তাড়িতচৌম্বকীয় বিকিরণের প্রকৃতি এবং শূন্যস্থানে দ্রুতি অভিন্ন হলেও উৎপত্তি, কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে তাড়িতচৌম্বকীয় বিকিরণকে বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য পাল্লার কয়েকটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে। এ শ্রেণিবিভাগকে তাড়িতচৌম্বকীয় বর্ণালী বলে।

হাইগেনন্সের নীতি

একটি তরঙ্গমুখের উপরিস্থ সকল বিন্দু এক একটি বিন্দু উৎস হিসেবে গণ্য হবে, যা থেকে গৌণ তরঙ্গ উৎপন্ন হয়ে মূল তরঙ্গের দ্রুতিতে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। পরবর্তী যেকোনো মুহূর্তে এ গৌণ তরঙ্গমুখগুলোর সাধারণ স্পর্শক তল হবে ঐ সময় উক্ত তরজঙ্গমুখের নতুন অবস্থান।

সুসঙ্গত উৎস

দুটি আলোক উৎস থেকে নির্গত আলোক তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বা তরঙ্গদৈর্ঘ্য সমান, বিস্তার সমান বা প্রায় সমান এবং দশা সবর্দা পরস্পরের সাথে একই হলে বা নির্দিষ্ট দশা-পার্থক্য বজায় থাকলে, এরূপ দুটি ক্ষুদ্র ও খুব কাছাকাছি স্থাপিত উৎসকে সুসঙ্গত উৎস বলে।

আলোর ব্যতিচার

পাশাপাশি দুটি উৎস থেকে নির্গত সমান কম্পাঙ্ক ও বিস্তারের দুটি আলোক তরঙ্গের উপরিপাতনের ফলে পর্যায়ক্রমে উজ্জ্বল ও অন্ধকার অবস্থার সৃষ্টি হওয়াকে আলোর ব্যতিচার বলে।

গঠনমূলক ব্যতিচার

সমান কম্পাঙ্ক ও বিস্তারের দুটি তরঙ্গের উপরিপাতনের ফলে তরঙ্গদ্বয় সমদশায় মিলিত হয়ে লব্ধি তরঙ্গের বিস্তার বা তীব্রতা সর্বোচ্চ হওয়াকে গঠনমূলক ব্যতিচার বলে।

ধ্বংসাত্মক ব্যতিচার

সমান কম্পাঙ্ক ও বিস্তারের দুটি তরঙ্গের উপরিপাতনের ফলে তরঙ্গদ্বয় বিপরীতদশায় মিলিত হয়ে লব্ধি তরঙ্গের বিস্তার বা তীব্রতা সর্বনিম্ন হওয়াকে ধ্বংসাত্মক ব্যতিচার বলে।

আলোর অপবর্তন

আলো প্রতিবন্ধকের তীক্ষ্ণ ধার ঘেঁষে বা সূক্ষ্ম ছিদ্র বা চিরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় কিছুটা বেঁকে ছায়া অঞ্চলের মধ্যে প্রবেশ করে। এ ঘটনাকে আলোর অপবর্তন বলে।

অপবর্তন গ্রেটিং

অস্বচ্ছ অংশ দিয়ে পৃথকীকৃত সমদূরত্বে খুব কাছাকাছি পরপর সাজানো সমান প্রস্থের খুব বেশি সংখ্যক চির, যার সাহায্যে আলোর অপবর্তন সৃষ্টির মাধ্যমে বর্ণালী বিশ্লেষণ ও তরঙ্গদৈর্ঘ্য নির্ণয় করা যায় তাকে অপবর্তন গ্রেটিং বলে।

গ্রেটিং ধ্রুবক

গ্রেটিংয়ের একটি চির ও একটি অস্বচ্ছ অংশের প্রশ্নের যোগফলকে উক্ত গ্রেটিংয়ের গ্রেটিং ধ্রুবক বলে। একটি চিরের প্রশ্ন a এবং একটি অস্বচ্ছ অংশের প্রস্থ b হলে, গ্রেটিং ধ্রুবক, d = a + b

আলোর সমবর্তন ও সমবর্তিত আলো

ফিল্টারের মাধ্যমে বিভিন্ন তলে কম্পমান আলোক তরঙ্গের কম্পন একটি নির্দিষ্ট তলে হওয়ার ঘটনাকে আলোর সমবর্তন বলে। কোনো আলোকরশ্মির কম্পন কেবল একটি নির্দিষ্ট দিকে বা তলে হলে ঐ আলোকে বলা হবে সমবর্তিত আলো।

সমবর্তন তল

সমতল সমবর্তিত আলোক তরঙ্গের যে তলে কম্পন অবস্থান করে, তাকে কম্পন তল এবং কম্পন তলের সাথে লম্ব তলকে বা যে তলে কোনো কম্পন থাকে না তাকে সমবর্তন তল বলে।

ম্যালাসের সূত্র

বিশ্লেষকের মধ্য দিয়ে সমবর্তিত আলো গমনের ফলে এর তীব্রতা সমবর্তক ও বিশ্লেষকের নিঃসরণ তলের মধ্যবর্তী কোণের cosine এর বর্ণের সমানুপাতিক।

সমবর্তন কোণ বা ব্রুস্টার কোণ

যে কোণে আপতিত হলে প্রতিফলিত রশ্মি সম্পূর্ণ রূপে সমবর্তিত হয় তাকে সমবর্তন কোণ বা ব্রুস্টার কোণ বলে।

ব্রুস্টারের সূত্র

সমবর্তন কোণের ট্যানজেন্ট প্রতিসারক মাধ্যমের প্রতিসরণাঙ্কের সমান।

আলোর দ্বৈত প্রতিসরণ

আলোক রশ্মি ক্যালসাইট স্ফটিকের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের সময় দুটি প্রতিসরিত রশ্মি পাওয়া যায়। এ ঘটনাকে আলোর দ্বৈত প্রতিসরণ বলে।

Leave a Reply