আপনি বাজারে গেলেন এবং দেখলেন-
আপনার কাছে যা টাকা আছে, তা দিয়ে দুই কেজি একশত গ্রাম আলু কেনা যাবে । আপনি তাই
করলেন । অর্থাৎ দুই কেজি একশত গ্রাম আলু নিয়ে আসলেন । কিন্তু আপনি যদি কোন সুপার
শপ থেকে আলু কিনতে চান, সেখানে এক কেজি করে আলুর একটা করে প্যাকেট করা আছে । আপনি
চাইলে সেখান থেকে যেকোন পরিমাণ আলু কিনতে পারবেন । আপনাকে এক কেজির গুণিতক পরিমাণ
আলু কিনতে হবে । অর্থাৎ এক কেজি নিলে একটা প্যাকেট, আট কেজি নিলে আটটি প্যাকেট ।
আপনি চাইলে ২কেজি ১০০ গ্রাম আলু সেখানে পাবেন না ।

আলো কি তরঙ্গ নাকি কণা, এটা
নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানে তুমুল বিতর্ক চলছিল । এর আগে নিউটন বলেছিলে, আলো হল-কণা ।
অর্থাৎ আমরা যখন আলো জ্বালাই, তখন উৎস থেকে কণা গুলো দেয়ালে গিয়ে প্রতিপ্রভা
সৃষ্টি করে এবং আমরা দেয়ালকে দেখতে পাই । আবার হাইগেন বলছিলেন, আলো হল তরঙ্গ । আর
এগুলো নিয়েই বিতর্ক চলছিল প্রায় আড়াইশত বছর । এরপর বিংশ শতাব্দীতে পদার্থবিদ
ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক প্রস্তাব করেন, আলো হল এক এবং একাধিক শক্তির প্যাকেট । যেখানে
একটি প্যাকেটের শক্তিকে তিনি নাম দিলেন, কোয়ান্টা । অনেকটা এক কেজি আলুর প্যাকেটের
মত । আপনি যেমন চাইলেও এক কেজির চেয়ে কম বা ভগ্নাংশ পরিমাণ আলু কিনতে পারেন না,
তেমনি আলোর সর্বনিম্ন পরিমাণ হল- এক কোয়ান্টার সমান । অনেকটা এমন, আমরা যদি আলোকে
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে কাটতে পারতাম, তবে আমাদের কাছে সবচেয়ে ক্ষুদ্র টুকরাটির
পরিমাণ হত- এক ফোটনের সমান । যাকে আর ক্ষুদ্র করাও সম্ভব নয় । অর্থাৎ আমরা যখন আলো
জ্বালাই, তখন উৎস থেকে অনেকগুলো ফোটন উৎস থেকে ছুটে যায় ।

আলোর এই বৈশিষ্ট্য, আলো নিয়ে
অনেকগুলো বিতর্ককে নিস্তব্ধ করে দিয়ে নতুন অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম দেয় । কিন্তু
পরবর্তিতে ডি-ব্রগলি প্রমাণ করেন, আলোর মধ্যে একই সাথে কণা এবং তরঙ্গ উভয় ধর্মই
বিদ্যমান ।

জিওন আহমেদ

Leave a Reply