আমরা সকলেই জানি, শুন্যতা থেকেই সৃষ্টি হয়েছে
আমাদের এই মহাবিশ্ব । শুন্যতা থেকে এক শক্তিশালী কণা বা পরম বিন্দু তৈরি হয়েছিল । আর
সেই কণা বা পরম বিন্দুর বিস্ফোরণের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়েছে এই মহাবিশ্বের ভৌত জগত ।
যাকে আমরা বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ বলে থাকি । পরম বিন্দুর বিস্ফোরণের মাধ্যমে
মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে, এটাকে যদি মেনেও নেয়া যায়, তবে শুন্যতা থেকে কিভাবে এই পরম
বিন্দু সৃষ্টি হল ? এ প্রশ্নটা থেকে যায় । আসুন বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করি ।

আমরা উপরে যে শুন্যতার কথা বলছি বা সাধারণত যে
শুন্যতার কথা বলে থাকি, তা আসলে কি ? সেই শুন্যতা দেখতে কেমন । সাধারণত শুন্যতা বলতে
আমরা যা বুঝি, যেখানে কিছুই নেই । যারা কিছুটা বিজ্ঞান মনস্ক, তাদের ভাষায়- শুন্যতা
মানে সেখানে কিছুই নেই । এমনকি বায়ুর একটি কণাও না ।

হ্যাঁ উপরে আমি এমনই এক শুন্যতার কথাই বলেছি
। যেখানে কোন কণার অস্তিত্বই নেই । হোক না সেটা বায়ুর কণা । এমন শুন্যতা আছে নাকি
? আছে তো । টরিসেলির পরিক্ষায় পারদ টেসটিউব বেয়ে কিছুটা উপরে ওঠার পর সে ফাঁকা স্থানটি
থাকে, সেটাই বায়ুশূন্য শুন্য স্থান । এমনই এক শুন্যতা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল আমাদের
এই মহাবিশ্ব । এখানে অনেকেই বলেছিল,
Something From Nothing. অর্থাৎ শুন্য থেকে
কিছু সৃষ্টি ।

কিন্তু আমরা যেটাকে শুন্যতা বলছি, সেটাই কি
প্রকৃত শুন্যতা ? না, সেটাই শুন্যতা নয় । সেই শুন্যতায় আছে অদৃশ্য এক শক্তি । যাকে
বলা হয়- ভ্যাকুয়াম এনার্জি । আর এই এনার্জি থেকেই জোড়ায় জোড়ায় তৈরি হয় কণা এবং
প্রতিকণা । যারা পুনরায় ধ্বংস হয়ে আবার শক্তিতে পরিণত হয়ে যায় । আমরা যাকে শুন্যতা
এবং শান্ত ভেবেছিলাম, সেই শুন্যতায় এভাবেই চলতে থাকে কণা সৃষ্টি এবং ধ্বংসের খেলা
। যাকে বলা হয় কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন ।

এখন প্রশ্ন, কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনে যদি
কণারা সৃষ্টি এবং ধ্বংস হতেই থাকে, তাহলে সেখানে পরম বিন্দু বা কণা আসলো কোথা থেকে
? এই বিন্দুগুলো এসেছে, কোয়ান্টাম ইনফ্লেশন থেকে । কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনে যখন কণার
সৃষ্টি এবং ধ্বংস চলতে থাকে, তখন কয়েক বিলিয়নে একটি বা দুটি কণা টিকে থাকে । যাকে
বলা হয় কোয়ান্টাম ইনফ্লেশন । এভাবে কণা জমা হতে হতে তারা পরম বিন্দু সৃষ্টি করে ।
যার বিস্ফোরণেই সৃষ্টি হয়, আমাদের এই সুবিশাল মহাবিশ্ব । কাজেই
Something From Nothing নয় বরংSomething From Something.

 

জিওন আহমেদ

Leave a Reply