পরিমাপ ছাড়া বিজ্ঞান যে পুরোপুরি অচল সে নিয়ে কোন সন্দেহ নেই । কিন্তু আমরা দৈনন্দিন জীবনে বা বিজ্ঞানের জন্য যা কিছুই পরিমাপ করিনা কেন, তাতে ত্রুটি থাকবেই । পরিমাপে এই ত্রুটিগুলোকে আমরা ৪টি ভাগে ভাগ করে থাকি । সেগুলো হল-

  1. যান্ত্রিক ত্রুটি । 
  2. পর্যবেক্ষণ জনিত ত্রুটি । 
  3. এলোমেলো ত্রুটি । 
  4. পূনরাবৃত্তিক ত্রুটি । 
এদের মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি আবার ৩ধরনের হয়ে থাকে । সেগুলো- 
  1. শূন্য ত্রুটি । 
  2. পিছট ত্রুটি । 
  3. লেভেল ত্রুটি । 
এবার এই ত্রুটিগুলোর সাথে সংক্ষিপ্ত পরিচয় হওয়া যাক । 

যান্ত্রিক ত্রুটি

পরিমাপে যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় সে যন্ত্র যদি সঠিক বা সুবেদি না হয় তবে
তার দ্বারা পরিমাপ করলে পরিমাপে যে ত্রুটি হয় তাকে যান্ত্রিক ত্রুটি বলে
স্লাইড
কালিপার্স, স্ক্রু গজে এ ধরনের ত্রুটি হয় । যেমন আপনি যদি একটি পাল্লা দিয়ে আলু পরিমাপ করতে চান, কিন্তু পাল্লাটির উভয় পাশে যদি ভর ব্যালেন্স করা না থাকে, তবে পরিমাপে ভুল হবে । 

পর্যবেক্ষণ জনিত বা ব্যাক্তিগত ত্রুটি

পর্যবেক্ষকের পর্যবেক্ষণে ভুল বা সঠিক মূল্যয়নের অভাবে
পরিমাপে যে ত্রুটি হয় তাকে পর্যবেক্ষণ জনিত বা ব্যাক্তিগত ত্রুটি বলে
। আপনি দেখতে পারছেন, আপনার হাতের কলমটির দৈর্ঘ্য ১০ সেন্টিমিটার । কিন্তু আপনার বন্ধু দেখছে, এটি ১০ সেন্টিমিটারের কিছুটা বেশি হবে । তার মানে যেকোন একজনের পর্যবেক্ষণে ত্রুটি আছে । 

অনিয়মিত বা এলোমেলো ত্রুটি

সাবধানতা অবলম্বন করা সত্তেও
পর্যবেক্ষকের পর্যবেক্ষণে অথবা যন্ত্রের ত্রুটি থাকার কারণে পরিমাপে যে ত্রুটি হয়
তাকে অনিয়মিত বা এলোমেলো ত্রুটি বলে
 

নিয়মিত বা পুনরাবৃত্তিক ত্রুটি

পরিক্ষাকালে কোন কোন ত্রুটির ফলে পরীক্ষণীয় রাশির পরীক্ষালব্ধ মান প্রতিবারে
নিয়মিত ভাবে প্রকৃত মান অপেক্ষা কিছু কম বা বেশি হয়
, এই ধরনের ত্রুটিকে নিয়মিত বা পুনরাবৃত্তিক
ত্রুটি বলে
। একই পাঠ কয়েকবার নিয়ে তার গড় মান নিলে আমরা এই ত্রুটিকে কিছুটা কমিয়ে আনতে পারি । 

শূন্য ত্রুটি

ভার্ণিয়ার
স্কেল
, স্ক্রু গজ, স্লাইড
কালিপারস বা স্ফেরোমিটারে চোয়ালদ্বয় স্পরশরত অবস্থায় মূল স্কেলের শূন্য দাগ যদি ভার্ণিয়ার
স্কেলের শূন্য দাগের সাথে না মিলে যায় তবে সেই যন্ত্রে শূন্য ত্রুটি আছে বলা যায়

পিছট ত্রুটি

নাট বা স্ক্রুর উপর ভিত্তি করে যে সকল যন্ত্র
তৈরি সে সকল যন্ত্রে নাট বা স্ক্রুর গর্ত ক্ষয় হয়ে গেলে স্ক্রুটিকে উভয়দিকে ঘুরালে
সমান সরণ হয় না
ফলে
পরিমাপে ত্রুটি হয় যাকে পিছট ত্রুটি বলে

লেভেল ত্রুটি

নিক্তি, ট্যানজেন্ট গ্যালভানোমিটার বা বিক্ষেপ
চৌম্বকমান যন্ত্রের যন্ত্রটিকে ভূমির সাথে সঠিকভাবে লেভেলিং করে না নিলে পরিমাপে
যে ধরনের ত্রুটি হয় তাকে লেভেল ত্রুটি বলে
স্ফেরোমিটারের সাহায্যে
পরিমাপের সময় এ ধরনের ত্রুটি হয় ।

জিওন আহমেদ

Leave a Reply