নাস্তিক এবং বিশ্বাসীগণ
আমরা অবশ্যই এক সংকটময় সময়ে অবস্থান করছি । আর এ সংকট কোন
বিশেষ ধর্ম বা গোত্রের মানুষের জন্য নয় । আমাদের সবার জন্য । এটা হতে পারি আমাদের কোন
কর্মের ধারাবাহিক ফলাফল । সেই সংকটে দাঁড়িয়ে দেখছি, আমরা এটাকে বিভিন্ন সময়
বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করছি, বিভিন্ন গোত্রের উপর চাপিয়ে দিচ্ছি । কিছুদিন আগেও এই
চাপিয়ে দেয়ার হারটা বেশি ছিল । কিন্তু তা যখন আমাদের কাঁধে এসে ভর করতে শুরু করল,
আমরা কিছুটা দমিয়ে গেলাম । আমাদের মাঝে একটা দল এমনও তৈরি হয়েছে, যারা এখান থেকে
ফয়দা উশুল করতে নিজেদেরকে ব্যাস্ত করে তুলেছে । এটাকে আমি কিভাবে সংজ্ঞায়িত করব
সেটা আমার নগন্যতম জ্ঞানের মস্তিস্কে আসেনা । যেহেতু আমি এটাকে সংজ্ঞায়িত করতে
পারছিনা, তাই জানা কিছু তথ্যের মাধ্যমেই এটাকে যুক্তিতর্কে নিয়ে আসতে চেষ্টা করব ।
আমি যে দুটি পথ অবলম্বন করব তা হল- ধর্ম এবং বিজ্ঞান ।
বিশেষ ধর্ম বা গোত্রের মানুষের জন্য নয় । আমাদের সবার জন্য । এটা হতে পারি আমাদের কোন
কর্মের ধারাবাহিক ফলাফল । সেই সংকটে দাঁড়িয়ে দেখছি, আমরা এটাকে বিভিন্ন সময়
বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করছি, বিভিন্ন গোত্রের উপর চাপিয়ে দিচ্ছি । কিছুদিন আগেও এই
চাপিয়ে দেয়ার হারটা বেশি ছিল । কিন্তু তা যখন আমাদের কাঁধে এসে ভর করতে শুরু করল,
আমরা কিছুটা দমিয়ে গেলাম । আমাদের মাঝে একটা দল এমনও তৈরি হয়েছে, যারা এখান থেকে
ফয়দা উশুল করতে নিজেদেরকে ব্যাস্ত করে তুলেছে । এটাকে আমি কিভাবে সংজ্ঞায়িত করব
সেটা আমার নগন্যতম জ্ঞানের মস্তিস্কে আসেনা । যেহেতু আমি এটাকে সংজ্ঞায়িত করতে
পারছিনা, তাই জানা কিছু তথ্যের মাধ্যমেই এটাকে যুক্তিতর্কে নিয়ে আসতে চেষ্টা করব ।
আমি যে দুটি পথ অবলম্বন করব তা হল- ধর্ম এবং বিজ্ঞান ।
আমি দুইটি পথের কথা উল্লেখ করলেও আমার কাছে আপাতত এই দুটিই
একই পথ । কারণ যার হাত ধরে আধুনিক বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি পেয়েছি সেই যুগশ্রেষ্ট
বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তো উল্লেখ করেছিলেনই, “বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধ আর ধর্ম
ছাড়া বিজ্ঞান পঙ্গু ।” তিনি হয়তো এটাই বোঝাতে চেয়েছেন, আপনি বিজ্ঞান না বুঝে
ধর্মকে বিশ্বাস করলে সেটা হবে অন্ধ বিশ্বাস আর ধর্মকে না বুঝে বিজ্ঞান চর্চা করলে
সেটার মাঝে অসম্পূর্ণতা থেকে যাবে । আর অসম্পূর্ণ জ্ঞান মূর্খতার চেয়ে যে ভয়াবহ
সেটা আমরা সবাই জানি । তবুও ধর্মের কিছু উদাহরণ দিয়েই শুরু করব । আমরা দেখতে পারছি
সম্প্রতি আমাদের কিছু সংখ্যক বিশ্বাসীগণ বলছেন, করোনা সংক্রান্ত যা কিছু ঘটছে তা অবিশ্বাসীদের
ধর্ম বিদ্যেষীতা এবং তার কিছু কুকীর্তিত ফল । উদাহরণ হিসেবে-চীনের উইঘুরে মুসলিম
নির্যাতনের জন্য চীনকে তার পরিণতি ভোগ করতে হল, আফগান সিরিয়ায় হাফেজদের
আত্নচিৎকারে অ্যামেরিকা মৃত্যুকূপে পরিণত হল, মসজিদে আগুন লাগিয়ে মুসলিমদের পুড়িয়ে
ফেলার জন্য স্পেনকে মূল্য দিতে হচ্ছে, রোমে মুসলিমদের আত্নচিৎকারের ফল ভোগ করতে
হচ্ছে ইতালিকে, দিল্লিতে মুসলিমদের আত্নচিৎকারে ভারতে গজব এসে হানা দিল । এসবই
আমাদের বিশ্বাসীদের নিজেদের তৈরি কিছু হাইপোথেসিস । কিন্তু তারা কি দেখছেন না, এই
মহামারীতে আক্রান্ত এবং মারা যাওয়া মুসলিমের সংখ্যাটা কম নয় ? আমাদের এই
বিশ্বাসীদের একটা উদাহরণ মনে করিয়ে দিই । হযরত নূহ (আঃ) এর প্রার্থনায় যে মহা
প্লাবন সংগঠিত হয়েছিল, সেই দুর্যোগে কোন মুসলিমের কোন ক্ষতি হয়নি । সেটাকে আপনি
এমন অলৌকিক ঘটনা দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবেন । কিন্তু বর্তমানের যে মহামারীতে
মুসলিম অমুসলিম আক্রান্ত হচ্ছে, মুসলিমদের কাবা বন্ধ রাখা হচ্ছে সেটাকে আপনি
কিভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন ? যারা নিজেদের অপব্যাখ্যার জন্য শিক্ষা নিতে চান, তাদের
জন্য আমার এই ব্যাখ্যা শুধু একটা পথ হতে পারে । নিজেকে জিজ্ঞেস করেন, পরিসংখান
দেখেন, এরপর সিদ্ধান্ত আপনার ।
একই পথ । কারণ যার হাত ধরে আধুনিক বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি পেয়েছি সেই যুগশ্রেষ্ট
বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তো উল্লেখ করেছিলেনই, “বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম অন্ধ আর ধর্ম
ছাড়া বিজ্ঞান পঙ্গু ।” তিনি হয়তো এটাই বোঝাতে চেয়েছেন, আপনি বিজ্ঞান না বুঝে
ধর্মকে বিশ্বাস করলে সেটা হবে অন্ধ বিশ্বাস আর ধর্মকে না বুঝে বিজ্ঞান চর্চা করলে
সেটার মাঝে অসম্পূর্ণতা থেকে যাবে । আর অসম্পূর্ণ জ্ঞান মূর্খতার চেয়ে যে ভয়াবহ
সেটা আমরা সবাই জানি । তবুও ধর্মের কিছু উদাহরণ দিয়েই শুরু করব । আমরা দেখতে পারছি
সম্প্রতি আমাদের কিছু সংখ্যক বিশ্বাসীগণ বলছেন, করোনা সংক্রান্ত যা কিছু ঘটছে তা অবিশ্বাসীদের
ধর্ম বিদ্যেষীতা এবং তার কিছু কুকীর্তিত ফল । উদাহরণ হিসেবে-চীনের উইঘুরে মুসলিম
নির্যাতনের জন্য চীনকে তার পরিণতি ভোগ করতে হল, আফগান সিরিয়ায় হাফেজদের
আত্নচিৎকারে অ্যামেরিকা মৃত্যুকূপে পরিণত হল, মসজিদে আগুন লাগিয়ে মুসলিমদের পুড়িয়ে
ফেলার জন্য স্পেনকে মূল্য দিতে হচ্ছে, রোমে মুসলিমদের আত্নচিৎকারের ফল ভোগ করতে
হচ্ছে ইতালিকে, দিল্লিতে মুসলিমদের আত্নচিৎকারে ভারতে গজব এসে হানা দিল । এসবই
আমাদের বিশ্বাসীদের নিজেদের তৈরি কিছু হাইপোথেসিস । কিন্তু তারা কি দেখছেন না, এই
মহামারীতে আক্রান্ত এবং মারা যাওয়া মুসলিমের সংখ্যাটা কম নয় ? আমাদের এই
বিশ্বাসীদের একটা উদাহরণ মনে করিয়ে দিই । হযরত নূহ (আঃ) এর প্রার্থনায় যে মহা
প্লাবন সংগঠিত হয়েছিল, সেই দুর্যোগে কোন মুসলিমের কোন ক্ষতি হয়নি । সেটাকে আপনি
এমন অলৌকিক ঘটনা দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবেন । কিন্তু বর্তমানের যে মহামারীতে
মুসলিম অমুসলিম আক্রান্ত হচ্ছে, মুসলিমদের কাবা বন্ধ রাখা হচ্ছে সেটাকে আপনি
কিভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন ? যারা নিজেদের অপব্যাখ্যার জন্য শিক্ষা নিতে চান, তাদের
জন্য আমার এই ব্যাখ্যা শুধু একটা পথ হতে পারে । নিজেকে জিজ্ঞেস করেন, পরিসংখান
দেখেন, এরপর সিদ্ধান্ত আপনার ।
চলুন বিজ্ঞান দিয়ে কিছুটা জবাব দেয়া যাক । যদিও অনেকেই
বিজ্ঞানকে নাস্তকতার সারিতে মনে করেন । বিজ্ঞানের একটা স্লোগান আছে । তা হল- “আমরা
যা কিছুই দেখছি তাই আপেক্ষিক, কোন কিছুই পরম নয় ।” হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি
একটা গাণিতিক রূপও দিয়েছেন । তা হল-“সব কিছু আপেক্ষিক হলেও, আপেক্ষিকতার স্কেলেও
আমরা কোন কিছুকে শতভাগ নিখুঁতভাবে পরিমাপ বা বিচার করতে পারবনা ।” সুতরাং বিজ্ঞান
এখনও বিশ্বাসের একটা জায়গা ছেড়ে দিয়েই কথা বলছে । তাই বিজ্ঞান কখনই নাস্তিকতা
কিংবা আস্তিকতার জালে বন্দি থাকেনি । শুধু বিজ্ঞান যা খুজে পায়নি, তাকে কখনও
সংজ্ঞায়িত করেনি । তবুও স্টিফেন ডব্লিউ হকিং তো বলেই দিয়েছেন, “আমরা মানুষ, যারা
প্রকৃতির মৌলিক কণাগুলোর নিছক সংকলন মাত্র ।” আর সেই জায়গাটি থেকে আমরা প্রকৃতির
কারণ এবং ধারাবাহিকতার সূত্রগুলোকে যতটুকু জানতে কিংবা ব্যাখ্যা করতে পেরেছি তাই
আমাদের অনেক বড় বিজয় । যেহেতু প্রকৃতি সর্বদা কারণ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখে, তাই
বর্তমান হতে ভবিষ্যতের দিকে টাইম ট্রাভেলার হিসেবে আমাদের সেই ধারাবাহিকতার ভবিষ্যৎ
চিন্তা করা উচিত । আমরা আমাদের জগতটিতে ভবিষ্যতে যে জায়গায় দেখতে চাই, তার জন্য
আমাদের সবাইকে অবশ্যই সম্মিলিতভাবেই কাজ করে যেতে হবে । সে পর্যন্ত সবাই সাহসী হন,
কৌতূহলী হন, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন এবং সকল প্রভেদ জয় করুন । শুভকামনা রইল সকল ধর্মের
এবং বর্ণের মানুষের জন্য । ইনশাআল্লাহ আমরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব ।
বিজ্ঞানকে নাস্তকতার সারিতে মনে করেন । বিজ্ঞানের একটা স্লোগান আছে । তা হল- “আমরা
যা কিছুই দেখছি তাই আপেক্ষিক, কোন কিছুই পরম নয় ।” হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি
একটা গাণিতিক রূপও দিয়েছেন । তা হল-“সব কিছু আপেক্ষিক হলেও, আপেক্ষিকতার স্কেলেও
আমরা কোন কিছুকে শতভাগ নিখুঁতভাবে পরিমাপ বা বিচার করতে পারবনা ।” সুতরাং বিজ্ঞান
এখনও বিশ্বাসের একটা জায়গা ছেড়ে দিয়েই কথা বলছে । তাই বিজ্ঞান কখনই নাস্তিকতা
কিংবা আস্তিকতার জালে বন্দি থাকেনি । শুধু বিজ্ঞান যা খুজে পায়নি, তাকে কখনও
সংজ্ঞায়িত করেনি । তবুও স্টিফেন ডব্লিউ হকিং তো বলেই দিয়েছেন, “আমরা মানুষ, যারা
প্রকৃতির মৌলিক কণাগুলোর নিছক সংকলন মাত্র ।” আর সেই জায়গাটি থেকে আমরা প্রকৃতির
কারণ এবং ধারাবাহিকতার সূত্রগুলোকে যতটুকু জানতে কিংবা ব্যাখ্যা করতে পেরেছি তাই
আমাদের অনেক বড় বিজয় । যেহেতু প্রকৃতি সর্বদা কারণ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখে, তাই
বর্তমান হতে ভবিষ্যতের দিকে টাইম ট্রাভেলার হিসেবে আমাদের সেই ধারাবাহিকতার ভবিষ্যৎ
চিন্তা করা উচিত । আমরা আমাদের জগতটিতে ভবিষ্যতে যে জায়গায় দেখতে চাই, তার জন্য
আমাদের সবাইকে অবশ্যই সম্মিলিতভাবেই কাজ করে যেতে হবে । সে পর্যন্ত সবাই সাহসী হন,
কৌতূহলী হন, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন এবং সকল প্রভেদ জয় করুন । শুভকামনা রইল সকল ধর্মের
এবং বর্ণের মানুষের জন্য । ইনশাআল্লাহ আমরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব ।
লেখক
জিওন আহমেদ