বিজ্ঞান শব্দটা বোঝার পরপরই আমরা অতিবেগুনি রশ্মি শব্দটা শুনে থাকি । আমরা জানি, অনেক তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো থাকলেও আমরা শুধুমাত্র দৃশ্যমান অঞ্চলের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোক রশ্মি বা বর্ণালী দেখতে পাই । যার মধ্যে আছে পৃথক সাতটি বর্ণ । যেখানে সবচেয়ে কম তরঙ্গ দৈর্ঘ্য হল বেগুনি আলোর এবং সবচেয়ে বেশি তরঙ্গ দৈর্ঘ্য হল লাল আলোর ।

কিন্তু এই বেগুনি আলোর চেয়ে কিছুটা কম এবং আমাদের দৃষ্টিসীমার বাইরের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আলোক রশ্মি হল- অতিবেগুনি রশ্মি বা Ultraviolet Radiation. এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০ ন্যানোমিটার থেকে ৪০০ ন্যানোমিটারের মধ্যে থাকে । অতিবেগুনি সীমার আলোক রশ্মির মধ্যে অপেক্ষাকৃত যাদের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেশি, তারা পৃথিবীর বায়ুমন্ডল ভেদ করার ক্ষমতা রাখে ।

অনেকগুলো স্কেলের আলোক রশ্মি থাকলেও অতিবেগুনি রশ্মির নাম আমরা বেশিবার শুনে থাকি, কারণ এর রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার । যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-

  • ৩৫০-৩৭০ ন্যানোমিটারঃ মাছি বা পোকা আকৃষ্ট করতে ব্যবহৃত হয় ।
  • ৩০০-৩২০ ন্যানোমিটারঃ আলোক নিরাময় সংক্রান্ত চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় ।
  • ৩০০-৩৬৫ ন্যানোমিটারঃ মুদ্রণ যন্ত্রের কালি বা পলিমার সংস্করণে ব্যবহৃত হয় ।
  • ২৫০-৩০০ ন্যানোমিটারঃ ফরেন্সিক বিশ্লেষণ কিংবা মাদক শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয় ।
  • ২৭০-৩০০ ন্যানোমিটারঃ প্রোটিন বিশ্লেষণ, ডিএনএ সংশ্লেষণ কিংবা ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ।
  • ২৩০-৩৬৫ ন্যানোমিটারঃ জাতীয় পরিচয়পত্র শনাক্তকরণ, বারকোড কিংবা লেবেল শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয় ।
  • ২৩০-৪০০ ন্যানোমিটারঃ ইলেকট্রনিক্সে আলোক সেন্সর তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ।

এর অনেক কল্যাণমূলক ব্যবহার থাকলেও এটি কিন্তু সরাসরি আমাদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকরও । অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের উপর পড়লে আমাদের ত্বকের ভিতরের কিছু কোষ ভেঙ্গে যায় বা নষ্ট হয়ে যায় । ফলে ধীরে ধীরে ত্বকের টান টান ভাব নষ্ট হয়ে যায় । যে জন্য যারা সূর্য্যের আলোতে বেশি কাজ করে তাদের ত্বক দ্রুত কুচকে যায়, বলিরেখা পড়ে, ত্বকে দ্রুত বার্ধক্যের ছাপ পড়ে । ত্বকের আদ্রতা হারানো, মেসতা, ডার্ক স্পট ইত্যাদি হতে পারে এই অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ।

তবে বায়ুমণ্ডলের বেশ কিছু স্তর আমাদের সূর্য্যের এই অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা থাকে ।

This Post Has One Comment

  1. নামহীন

    It was helpful

Leave a Reply