এই প্রশ্নটার সহজ উত্তর হল-পৃথিবীর চারপাশে বায়ুমন্ডলে ভাসমান যে ছোট ছোট ধূলিকণাআছে, সূর্য থেকেআলো পৃথিবীতে আসার সময় বায়ুমন্ডলের ঐ কণাগুলি দ্বারা বিচ্ছুরিত হয়ে
যায়। নীল রঙের আলোর
তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম বলের্যালের বিচ্ছুরণনের সূত্র অনুযায়ী তা সবচেয়ে বেশি বিচ্ছুরিত হয়। যারফলে দিনের আলোতে আকাশকে নীল দেখায়। আর রাতের বেলা সূর্যরশ্মির অনুপস্থিতির কারনেএই আলোর বিচ্ছুরন ঘটেনা, ফলেআকাশ কালো দেখায়।
বিজ্ঞান প্রেমিকদের মধ্যে একটা বড় অংশের এই
উত্তরটা পছন্দ হবেনা । তাদের জন্য আর একটু বিস্তারিত তুলে ধরছি ।
স্যার আইজাক নিউটন পরীক্ষা করে দেখান যে সূর্য থেকে
পাওয়া সাদা আলো আসলে সাতটি আলাদা রঙের সমন্বয়। প্রতিটি আলাদা রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মান আলাদা।এদের মধ্যেলাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি
আর বেগুনী রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম ।
বিজ্ঞানী টিন্ড্যালপরীক্ষা করে দেখান, এক
গ্লাস পানির মধ্যে
দুধ এবং সাবান মিশিয়েদিয়ে
এবার তরলের পাত্রের একপাশে আলো ফেললে দেখা যায়– অপর পাশ থেকে আলোর নীলাভ আলোকরশ্মি
বিচ্ছুরিত হচ্ছে। যা টিন্ড্যাল ইফেক্ট নামে পরিচিত ।স্বচ্ছ পানির মধ্যে অবস্থিত সাবান
ও দুধের ক্ষুদ্র কণিকাগুলি আলোর এই বিচ্ছুরন সৃষ্টি করে।তার কয়েক বছর পরের্যালে এ বিষয়টি নিয়ে আরো বিস্তারিত
গবেষনা করে আলোর বিচ্ছুরনের নতুন একটি তত্ত্ব আবিস্কার করেন, যার্যালের বিচ্ছুরণনামে পরিচিত।
সহজ ভাষায়যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম তা বেশি বিচ্ছুরিত
হবে। নীল আলোর
তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক কম।
আর বেগুনী আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম ।
নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম বলে সেটা বেশি
বিচ্ছুরিত হয় এবং সেকারনেই
আকাশ নীল দেখায় । এখন প্রশ্ন হল- তাহলে বেগুনী রঙ্গের আলোকরশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্যতো নীল আলোর থেকেও কম । তাহলে আকাশ কেন বেগুনী দেখায় না?
প্রথমত বায়ুমন্ডলে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মির
বিচ্ছুরন সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যের জন্যএকই
নয়। একই সাথে
বায়ুমন্ডল পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে এত বেশি উচুতে অবস্থিত যে সেখান থেকে বিচ্ছুরিত আলো ভূপৃষ্ঠেপৌঁছাতেপরিবেশদ্বারা ঐ বেগুনী আলোর অনেকখানিকটা শোষিত হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত, মানুষের রেটিনায় তিন ধরনেরকোণথাকে। এরা লাল, নীল এবং সবুজ আলোতে সবচেয়ে
বেশি সংবেদনশীলতা দেখায়।
এইকোণগুলোর বিভিন্ন
অনুপাতের সংবেদনশীলতার সমন্বয়েই আমরা ভিন্ন ভিন্ন রঙ দেখে থাকি। আমাদের চোখের
কোষগুলি অতিবেগুনী আলোর জন্যসংবেদনশীল
নয়
।সেকারনে মানুষের কাছে আকাশকে গাঢ় বা অতিবেগুনী বলে মনে হয়না।
জিওন আহমেদ