তরঙ্গ

যে পর্যাবৃত্ত আলোড়ন মাধ্যমের কণাগুলোর পর্যাবৃত্ত কম্পনের সাহায্যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে শক্তি সঞ্চারিত করে কিন্তু মাধ্যমের কণাগুলোকে স্থানান্তরিত করে না তাকে তরঙ্গ বলে।

আড় তরঙ্গ

যদি কণার কম্পনের দিক এবং তরঙ্গ সঞ্চালনের দিক পরস্পর সমকোণে সংঘটিত হয় তাহলে ঐ কণা কর্তৃক সৃষ্ট তরঙ্গকে আড় তরঙ্গ বলে।

লম্বিক তরঙ্গ

যদি কণার কম্পনের দিক এবং তরঙ্গ সঞ্চালনের দিক একই দিকে বা সমান্তরালে সংঘটিত হয় তাহলে ঐ কণা কর্তৃক সৃষ্ট তরঙ্গকে লম্বিক বা দীঘল তরঙ্গ বলে।

শব্দ

যে শক্তি কোনো কম্পনশীল বস্তু থেকে উৎপন্ন হয়ে অবিচ্ছিন্ন ও স্থিতিস্থাপক মাধ্যমের মধ্যদিয়ে সঞ্চালিত হয়ে আমাদের কানে পৌছায় এবং শ্রবণের অনুভূতি সৃষ্টি করে তাকে শব্দ বলে।

তরঙ্গবেগ

কোনো মাধ্যমে তরঙ্গ নির্দিষ্ট দিকে একক সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে তরঙ্গবেগ বলে।

বিস্তার

তরঙ্গের উপর অবস্থিত কোনো কম্পনশীল কণা সাম্যাবস্থান থেকে যে কোনো একদিকে সর্বাধিক যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে ঐ কণার বা তরঙ্গের (রৈখিক) বিস্তার বলে।

দশা

যা দ্বারা কম্পমান বস্তুর যেকোনো মুহূর্তের অবস্থা, অবস্থান ও গতির দিক নির্ধারণ করা যায় তাকে দশা বলে।

আদি দশা

পর্যবেক্ষণ শুরুর মুহূর্তে কোনো কণার যে দশা থাকে তাকে আদি দশা বলে। অর্থাৎ, সময়ের দশাই হলো আদি দশা।

অগ্রগামী তরঙ্গ

কোনো আড় বা লম্বিক তরঙ্গ কোনো বিস্তৃত মাধ্যমের এক স্তর হতে অন্য স্তরে সঞ্চালিত হয়ে ক্রমাগত সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে তাকে অগ্রগামী তরঙ্গ বলে।

স্থির তরঙ্গ

সীমাবদ্ধ মাধ্যমে দুটি পরস্পর বিপরীতমুখী অগ্রগামী তরঙ্গের বিস্তার ও পর্যায়কাল/ কম্পাঙ্ক/তরঙ্গদৈর্ঘ্য সমান হলে এদের উপরিপাতনের ফলে যে নতুন তরঙ্গের উৎপত্তি হয় তাকে স্থির তরঙ্গ বলে।

সুস্পন্দ বিন্দু

স্থির তরঙ্গের যেসব বিন্দুতে লব্ধি তরঙ্গের (কণার) বিস্তার সর্বাধিক হয় তাদের সুস্পন্দ বিন্দু বলে।

নিস্পন্দ বিন্দু

স্থির তরঙ্গের যেসব বিন্দুতে কণার লব্ধি তরঙ্গের বিস্তার শূন্য হয় তাদের নিস্পন্দ বিন্দু বলে।

তরঙ্গের তীব্রতা

কোনো অগ্রগামী তরঙ্গের সমকোণে অবস্থিত একক ক্ষেত্রফলের মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ শক্তি প্রবাহিত হয় তাকে তরঙ্গের তীব্রতা বলে।

শব্দের তীব্রতা

শব্দ সঞ্চালনের অভিমুখে লম্বভাবে অবস্থিত কোনো বস্তুর (উপর কোনো বিন্দুর চারদিকে) একক ক্ষেত্রফলের মধ্যদিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে শব্দশক্তি প্রবাহিত হয় তাকে শব্দের তীব্রতা বলে।

শব্দের তীক্ষ্ণতা

শব্দের যে বৈশিষ্ট্যের জন্য কোনো সুর চড়া বা চিকন কোনো সুর মোটা বা খাদের তা বোঝা যায় তাকে শব্দের তীক্ষ্ণতা বলে।

প্রমাণ তীব্রতা

1000 Hz কম্পাঙ্কবিশিষ্ট 10-12 Wm² তীব্রতাকে প্রমাণ তীব্রতা বলা হয়।

তীব্রতা লেভেল

কোনো শব্দের তীব্রতা এবং প্রমাণ তীব্রতার অনুপাতের লগারিদমকে ঐ শব্দের তীব্রতা লেভেল বলে।

বেল

শব্দের প্রমাণ তীব্রতা যখন 10 গুণ বৃদ্ধি পায় তখন শব্দোচ্চতা যে পরিমাণ বাড়ে তাকে। বেল (B) বলে।

ডেসিবেল

১ বেল (B) এর এক-দশমাংশকে। ডেসিবেল বলা হয়।

সুরবিরাম

দুটি সুরের কম্পাঙ্কের অনুপাতকে সুরবিরাম বলে।

ত্রয়ী

যখন তিনটি শব্দের কম্পাঙ্কের অনুপাত 4:5:6 হয় তখন তারা মিলে সুমধুর সুর উৎপাদন করে। শব্দের এরূপ সমন্বয়কে সংগীতে ত্রয়ী বলে।

স্বরসংগতি

যখন ত্রয়ীর সাথে অতিরিক্ত একটি শব্দ এমনভাবে মিলিত হয় যাতে অতিরিক্ত শব্দ ত্রয়ীর নিম্নতম শব্দের অষ্টক হয় অর্থাৎ এদের কম্পাঙ্কের অনুপাত 4:586ঃ৪ হয়, তাহলে এদের সমন্বয়ে শ্রুতিমধুর সুর উৎপন্ন হয়। এই সমন্বয়কে স্বরসংগতি বলে।

মেলডি

কতকগুলো শব্দ যদি একের পর এক ধ্বনিত হয়ে একটি সুমধুর সুরের সৃষ্টি করে তবে তাকে মেলডি বলে।

সলো

একটি মাত্র বাদ্যযন্ত্র বাজালে যে সুরের সৃষ্টি হয় তাকে সলো বা একক সংগীত বলে।

অর্কেস্ট্রা

যখন অনেকগুলো বাদ্যযন্ত্র একসঙ্গে বাজিয়ে একটি সমতান বা একটি মেলডি অথবা একটি সমতান ও মেলডি উভয়ই সৃষ্টি করা হয়, তখন তাকে অর্কেস্ট্রা বলে।