রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল

রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল অনুসারে পরমাণুর সমস্ত ধনাত্মক চার্জ পরমাণুর কেন্দ্রে অতি অল্প পরিসরে নিউক্লিয়াস নামক স্থানে অবস্থিত এবং ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বৃত্তাকার পথে আবর্তন করছে।

বোরের পরমাণু মডেল

পরমাণুর গঠন সম্পর্কে ১৯১৩ সালে বোর যে পরমাণু মডেল উপস্থাপন করেন তা হলো বোরের পরমাণু মডেল।

বোর পরমাণু মডেলের প্রথম স্বীকার্য- কক্ষপথের স্বীকার্য

ইলেকট্রন এমন কতগুলো নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করবে যেখানে এর কৌণিক ভরবেগ h/2π এর অখন্ড গুণিতক হবে।

বোর পরমাণু মডেলের দ্বিতীয় স্বীকার্য-শক্তি বিকিরণের স্বীকার্য

অনুমোদিত কক্ষপথে ইলেকট্রন আবর্তনকালে কোনো শক্তি বিকিরণ করে না, কিন্তু ইলেকট্রন যখন এক শক্তিস্তর থেকে অন্য কোনো শক্তিস্তরে গমন করে তখন শক্তির শোষণ বা নির্গমন হয়। ইলেকট্রন যখন উচ্চতর শক্তিস্তর থেকে নিম্নতর শক্তিস্তরে গমন করে তখন ঐ শক্তিস্তরদ্বয়ের শক্তির পার্থক্যের সমান শক্তিসম্পন্ন একটি ফোটন বিকিরণ করে।

নিউক্লিয়াস

পরমাণুর সমস্ত ধনাত্মক চার্জ এবং পরমাণুর প্রায় সমস্ত ভর এর কেন্দ্রে অতি অল্প স্থান জুড়ে থাকে। একে নিউক্লিয়াস বলে।

পারমাণবিক সংখ্যা

কোনো মৌলিক পদার্থের বা মৌলের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত প্রোটনের সংখ্যাকে ঐ মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বলে। পারমাণবিক সংখ্যাকে দ্বারা নির্দেশ করা হয়। পারমাণবিক সংখ্যাই একটি মৌলের পরিচয় বহন করে।

ভর সংখ্যা

কোনো মৌলের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত মোট প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যাকে ঐ মৌলের ভর সংখ্যা বলে।

নিউক্লিয়ন

নিউক্লিয়াসে যেসব কণা থাকে বা নিউক্লিয়াস যেসব কণা সমন্বয়ে গঠিত তাদেরকে নিউক্লিয়ন বলে।

আইসোটোপ

যেসব পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা সমান কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন, তাদেরকে আইসোটোপ বলে।

আইসোটোন

ভিন্ন পারমাণবিক সংখ্যার যেসব পরমাণুতে সমান সংখ্যক নিউট্রন থাকে, তাদেরকে বলা হয় আইসোটোন।

আইসোবার

ভিন্ন পারমাণবিক সংখ্যার যেসব পরমাণুর ভর সংখ্যা সমান তাদেরকে বলা হয় আইসোবার।

তেজস্ক্রিয়তা

ভারি মৌলিক পদার্থের স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভেঙ্গে যাওয়া এবং তা থেকে আলফা, বিটা ও গামা তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হওয়ার ঘটনাকে তেজস্ক্রিয়তা বলে।

তেজস্ক্রিয় রূপান্তর নিয়ম

তেজস্ক্রিয় পরমাণুর রূপান্তর নিচের নিয়মানুসারে ঘটে-

(ক) একটি তেজস্ক্রিয় পরমাণু থেকে একটি মাত্র আলফা অথবা একটি মাত্র বিটা কণা নির্গত হতে পারে।

(খ) কোনো পরমাণু হতে আলফা কণা নির্গত হলে নতুন পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা মূল পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা হতে দুই এবং ভর সংখ্যা মূল পরমাণুর ভর সংখ্যা হতে চার কম হবে।

তেজস্ক্রিয় ক্ষয় সূত্র

কোনো তেজস্ক্রিয় নমুনায় পরমাণু ভাঙ্গনের হার ঐ সময়ে উপস্থিত অক্ষত পরমাণু সংখ্যার সমানুপাতিক।

অবক্ষয় ধ্রুবক

কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের একটি পরমাণু একক সময়ে ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাব্যতাকে ঐ পদার্থের অবক্ষয় ধ্রুবক বলে।

অর্ধায়ু

কোনো তেজস্ক্রিয় নমুনায় পরমাণু সংখ্যা যে সময়ে ভেঙে অর্ধেকে পরিণত হয় সে সময়কে ঐ তেজস্ক্রিয় মৌলের অর্ধায়ু বলে।

গড় আয়ু

কোনো নমুনায় প্রত্যেকটি পরমাণুর পৃথক পৃথক আয়ুর যোগফলকে পরমাণুর প্রাথমিক সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে ঐ তেজস্ক্রিয় পদার্থের গড় আয়ু পাওয়া যাবে।

ভর ত্রুটি

নিউক্লিয়নগুলো মিলিত হয়ে নিউক্লিয়াস গঠনের সময় কিছুটা ভর অদৃশ্য হয়। একে ভর ত্রুটি বলে।

নিউক্লিয়াসের বন্ধন শক্তি

প্রোটন ও নিউট্রনগুলোকে নিউক্লিয়াসে একত্রে বেঁধে রাখতে কিছুটা শক্তির প্রয়োজন। এটাই নিউক্লিয়াসের বন্ধন শক্তি।

কৃত্রিম রূপান্তর

কোনো মৌলিক পদার্থকে দ্রুত গতিসম্পন্ন প্রোটন, আলফা কণা, নিউট্রন বা ইলেকট্রন দ্বারা আঘাত করে অন্য মৌলিক পদার্থে পরিণত করাকে কৃত্রিম রূপান্তর বলে।

নিউক্লিয় ফিশান

নিউট্রনের আঘাতে যদি কোনো ভারি পরমাণুর নিউক্লিয়াস প্রায় সমভরবিশিষ্ট দুটি অংশে বিভক্ত হয় এবং প্রচণ্ড পারমাণবিক শক্তি নির্গত হয়, তবে নিউক্লিয়াসের এরূপ বিভাজনকে নিউক্লিয় ফিশান বলে।

নিউক্লিয় ফিউশন

অত্যন্ত দ্রুত গতিসম্পন্ন দুটি হালকা নিউক্লিয়াসের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটলে এরা পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে একটি নিউক্লিয়াস গঠন করে। একে নিউক্লিয় ফিউশন বলে।

শৃঙ্খল বিক্রিয়া

শৃঙ্খল বিক্রিয়া হচ্ছে এমন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া যা একবার শুরু করে দেয়া হলে তা চালিয়ে রাখতে বাইরে থেকে আর কোনো শক্তির প্রয়োজন হয় না।

Leave a Reply