বল

যে বাহ্যিক কারণ স্থির বা গতিশীল বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন ঘটায় বা ঘটাতে চায় তাকে বল বলে।

গতি জড়তা

গতিশীল বস্তুর চিরকাল সমবেগে গতিশীল থাকতে চাওয়ার যে ধর্ম প্রবণতা তাকে গতি জড়তা বলে।

স্থিতি জড়তা

স্থিতিশীল বস্তুর চিরকাল স্থির থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা স্থিতি বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম তাকে স্থিতি জড়তা বলে।

মৌলিক বল

যেসব বল অন্যান্য বল থেকে উৎপন্ন হয় না এবং অন্য কোনো বলের রূপ বা রূপান্তর নয় বরং অন্যান্য বল এসব বলের কোনো না কোনো রূপের প্রকাশ সেসব বলই মৌলিক বল।

সবল নিউক্লীয় বল

পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত নিউক্লিয়নগুলোর মধ্যে যে প্রবল আকর্ষণ বল বিদ্যমান তাকে সবল নিউক্লীয় বল বলে।

দুর্বল নিউক্লিয় বল

যে স্বল্পপাল্লার ও স্বল্পমানের বল নিউক্লিয়াসের মধ্যে মৌলিক কণিকাগুলোর মধ্যে ক্রিয়া করে অনেক নিউক্লিয়সে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করে তাকে দুর্বল নিউক্লিয় বল বলে।

অভিকর্ষীয় একক

একক ভরবিশিষ্ট কোনো বস্তুকে পৃথিবী তার কেন্দ্রের দিকে যে বল দ্বারা আকর্ষণ করে তাকে অভিকর্ষীয় একক বলে।

স্থিতি ঘর্ষণ গুণাঙ্ক

দুটি বস্তু পরস্পরের সংস্পর্শে থাকলে স্থিতি ঘর্ষণের সীমাস্থ মান এবং অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ায় অনুপাতকে স্থিতি ঘর্ষণ গুণাঙ্ক বলে।

গতীয় ঘর্ষণ গুণাঙ্ক

কোনো বস্তু যখন অপর একটি বস্তুর ওপর দিয়ে স্থির বেগে চলতে থাকে তখন গতীয় ঘর্ষণ বল ও অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার অনুপাতকে গতীয় ঘর্ষণ গুণাঙ্ক বলে।

এক নিউটন বল

1 kg ভরের কোনো বস্তুকে 1 ms^-2 অনুভূমিক সরণ সৃষ্টি করতে তার উপর যে বল প্রয়োগ করতে হয় তাকে এক নিউটন বল বলে।

বলের ঘাত

কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং বলের ক্রিয়াকালের গুণফলই বলের ঘাত।

1 পাউন্ডাল বল

যে পরিমাণ বল। পাউন্ড ভরের কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত হলে 1ft.s^-2 ত্বরণ সৃষ্টি করে তাকে। পাউন্ডাল বল বলে।

ঘাতবল

খুব অল্প সময়ের জন্য খুব বড় মানের যে বল কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত হয় তাকে ঘাতবল বলে।

বলের ভারসাম্য

দুই বা ততোধিক বল একই সময়ে কোনো বস্তুর উপর ক্রিয়ার ফলে বস্তুটি যদি স্থির থাকে অর্থাৎ বস্তুর উপর প্রযুক্ত বলের লব্ধি শূন্য হয়, তবে তাকে বলের ভারসাম্য বলে।

ঘর্ষণ বল

একটি বস্তু যখন অন্য একটি বস্তুর উপর দিয়ে চলতে চেষ্টা করে বা চলতে থাকে তখন ঘর্ষণের কারণে যে বাধা বলের সৃষ্টি হয়, তাকে ঘর্ষণ বল বলে। ঘর্ষণ বল গতির বিপরীত দিকে বস্তুদ্বয়ের মিলনতলের স্পর্শক বরাবর ক্রিয়া করে।

ঘর্ষণ গুণাঙ্ক

পরস্পরের সংস্পর্শে থাকা দুটি তলের মধ্যে ক্রিয়াশীল সীমান্তিক ঘর্ষণ বলের মান এবং অভিলম্ব প্রতিক্রিয়ার অনুপাতকে ঘর্ষণ গুণাঙ্ক বলা হয়।

জড়তা

বস্তু যে অবস্থায় আছে চিরকাল সে অবস্থায় থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা সে অবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম তাই জড়তা।

মহাকর্ষ বল

মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা যে বলে পরস্পরকে আকর্ষণ করে তাকে মহাকর্ষ বল বলে।

এক ডাইন বল

1g ভরের বস্তুর উপর যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করলে এক সেন্টিমিটার/সেকেন্ড^-২ ত্বরণ সৃষ্টি হয় তাকে এক ডাইন বলে।

পরম একক

একক ভরবিশিষ্ট কোনো বস্তুকে একক অনুভূমিক ত্বরণ সৃষ্টি করতে তার উপর যে বল প্রয়োগ করতে হয় তাকে এক পরম একক বলে।

তাড়িত চৌম্বক বল

তড়িৎবল ও চৗম্বক বল সংযুক্ত অবস্থায় যে বলের সৃষ্টি করে তাকে তাড়িত চৌম্বক বল বলে।

ঘূর্ণন বল

ঘূর্ণায়মান কোনো কণার ব্যাসার্ধ ভেক্টর এবং কণার উপর প্রযুক্ত বলের ভেক্টর গুণফলই ঘূর্ণন বল।

মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র

বৃহৎ ভরবিশিষ্ট কোনো বস্তুর চারদিকে যে অঞ্চলের মধ্যে এর আকর্ষণ বল অনুভূত হয় সে অঞ্চলকে ঐ বস্তুর মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র বলে।

টর্ক

কোনো দৃঢ় বস্তুর উপর বল প্রযুক্ত হলে বস্তুটির মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট বিন্দু বা অক্ষের সাপেক্ষে ঘুরবার যে প্রবণতা সৃষ্টি হয় তাকে বলের ভ্রামক বা টর্ক বলে।

দ্বন্দ্ব

কোনো দৃঢ় বস্তুর দুটি ভিন্ন বিন্দুতে সমান মানের দুটি বলের পরস্পর বিপরীত দিকে ক্রিয়া করাই হলো দ্বন্দ্ব।

বলের ভ্রামক

কোনো বস্তুর অবস্থান ভেক্টর এবং ঐ বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল বলের ভেক্টর গুণনকে বলের ভ্রামক বলে।

জড়তার ভ্রামক

একটি নির্দিষ্ট অক্ষের চারদিকে ঘূর্ণায়মান দৃঢ় বস্তুর প্রত্যেকটি কণার ভর এবং ঘূর্ণন অক্ষ থেকে প্রত্যেকটি কণার দূরত্বের বর্গের গুণফলের সমষ্টিই জড়তার ভ্রামক।

কৌণিক ভরবেগ

দুর্ণায়মান কোনো বস্তু কণার অবস্থান ভেক্টর অর্থাৎ ঘূর্ণন অক্ষ হতে দূরত্ব এবং বস্তুকণার রৈখিক ভরবেগের ভেক্টর গুণফলকে কৌণিক ভরবেগ বলে।

কৌণিক বেগ

বৃত্তাকার পথে চলমান কোনো বস্তুর একক সময়ে যে কৌণিক সরণ ঘটে তাকে ঐ বস্তুর কৌণিক বেগ বলে।

কৌণিক সরণ

কোনো বস্তু বা কণা কোনো বিন্দুকে কেন্দ্র করে ঘুরার সময় যে কৌণিক দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে কৌণিক সরণ বলে।

সুষম বেগ

কোনো বস্তু যদি নির্দিষ্ট দিকে সমান সময়ে সমান পথ অতিক্রম করে তাহলে ঐ বস্তুর বেগই সুষম বেগ।

কেন্দ্রমুখী বল

কোনো বস্তু বৃত্তাকার পথে গতিশীল থাকার জন্য বৃত্তের কেন্দ্রের দিকে যে বল ক্রিয়া করে তাকে কেন্দ্রমুখী বল বলে।

কেন্দ্রমুখী ত্বরণ

বৃত্তপথে ঘূর্ণনরত কণা বা বস্তুর একটি ত্বরণ থাকে যার অভিমুখ কেন্দ্রের দিকে। একে কেন্দ্রমুখী ত্বরণ বলে।

রাস্তার ব্যাংকিং

রাস্তার বাঁক ঘুরবার সময় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাঁকের ভিতরের দিকে একটু ঢালু করে রাস্তার বাঁকগুলো তৈরি করা হয় যাতে যানবাহন চলাচল অধিকতর নিরাপদ হয়, এটিই রাস্তার ব্যাংকিং।

অপকেন্দ্র বল

সমদ্রুতিতে বৃত্তপথে আবর্তনরত বস্তুর উপর অভিকেন্দ্র বলের সমান ও বিপরীতমুখী অর্থাৎ কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে যে অলীক বল ক্রিয়া করে তাকে অপকেন্দ্র বল বলে।

সংঘর্ষ

অতি অল্প সময়ের জন্য কোনো বৃহৎ বল ক্রিয়া করে গতির হঠাৎ ব্যাপক পরিবর্তনই হলো সংঘর্ষ।

স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ

যে সংঘর্ষে বস্তুসমূহের মোট গতিশক্তি ও মোট ভরবেগ অপরিবর্তিত থাকে এবং সংঘর্ষের পর বস্তুসমূহ আলাদা থাকে, তাকে স্থিতিস্থাপক সংঘর্ষ বলে ।

Leave a Reply