গতিবিদ্যা

বলবিদ্যার যে শাখায় গতিশীল বস্তুর উপর বলের ক্রিয়া আলোচনা করা হয় তাই গতিবিদ্যা।

প্রসঙ্গ কাঠামো

কোনো বস্তুর অবস্থান বা গতি বর্ণনার জন্য যে স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাকে প্রসঙ্গ কাঠামো বলে।

জড় প্রসঙ্গ কাঠামো

কোন বস্তুর গতির বর্ণনার জন্য ত্রিমাত্রিক যে সুনির্দিষ্ট স্থানাংক ব্যবস্থা বিবেচনা করা হয় এবং যার সাপেক্ষে বস্তুটির গতি বর্ণনা করা হয় তাকে প্রসঙ্গ কাঠামো বলে।

একমাত্রিক প্রসঙ্গ কাঠামো

কোনো বস্তু যদি রেখা বরাবর গতিশীল থাকে তাহলে তার গতিকে একমাত্রিক গতি বলে। একমাত্রিক গতির জন্যে যে প্রসঙ্গ কাঠামো ধরা হয় তাকে একমাত্রিক প্রসঙ্গ কাঠামো বলে।

একমাত্রিক বস্তু

যেসব বস্তুর বিভিন্ন কণার অবস্থান একটিমাত্র স্থানাঙ্ক দ্বারা নির্দেশ করা যায় তারাই একমাত্রিক বস্তু।

দ্বিমাত্রিক বস্তু

যেসব বস্তুর বিভিন্ন কণার অবস্থান দুটি স্থানাঙ্ক দ্বারা নির্দেশ করা যায় তারাই দ্বিমাত্রিক বস্তু।

ত্রিমাত্রিক বস্তু

যেসব বস্তুর বিভিন্ন কণার অবস্থান তিনটি স্থানাঙ্ক দ্বারা নির্দেশ করা যায় তারাই ত্রিমাত্রিক বস্তু।

দ্বিমাত্রিক প্রসঙ্গ কাঠামো

প্রসঙ্গ বিন্দু এবং দুটি অক্ষ নিয়ে যে কাঠামো তৈরি হয়, তাই দ্বিমাত্রিক প্রসঙ্গ কাঠামো।

ত্রিমাত্রিক প্রসঙ্গ কাঠামো

যে বস্তুকণার অবস্থান তিনটি স্থানাঙ্ক দ্বারা নির্দেশ করা যায় তাকে ত্রিমাত্রিক প্রসঙ্গ কাঠামো।

স্থিতি

কোনো বস্তুর সব বিন্দুর স্থানাঙ্ক যদি সময় ও প্রসঙ্গ কাঠামোর সাপেক্ষে সিথর থাকে, তাহলে বস্তুর এ অবস্থাকে স্থিতি বলে।

পরম স্থিতি

প্রসঙ্গ বস্তু যদি প্রকৃতপক্ষে স্থির হয় তাহলে তার সাপেক্ষে যে বস্তু স্থিতিশীল রয়েছে সেও প্রকৃতপক্ষে স্থির। এ ধরনের স্থিতিকে পরম স্থিতি বলে।

পরম গতি

নিশ্চল কোনো প্রসঙ্গ কাঠামোর সাপেক্ষে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন হওয়াকে পরম গতি বলে।

অসম ত্বরণ

যদি কোনো বস্তুর গতিকালে তার ত্বরণের মান বা দিক বা উভয়েই পরিবর্তিত হয় তাহলে সেই ত্বরণকে অসম ত্বরণ বলে।

মধ্য বেগ

কোনো একটি গতিশীল বস্তুর প্রথম ও শেষ বেগের অভিমুখ একই হলে তাদের যোগফলের অর্ধেককে মধ্যবেগ বলে।

আপেক্ষিক বেগ

দুটি গতিশীল বস্তুর একটির সাপেক্ষে অন্যটির অবস্থানের পরিবর্তনের হারকে আপেক্ষিক বেগ বলে।

সমত্বরণ

কোনো বস্তুকণার বেগ যদি নির্দিষ্ট দিকে একই হারে পরিবর্তিত হতে থাকে তাহলে সেই ত্বরণই সমত্বরণ।

তাৎক্ষণিক ত্বরণ

সময় ব্যবধান শূন্যের কাছাকাছি হলে, সময়ের সাথে যেকোনো মুহূর্তে বস্তুকণার বেগের পরিবর্তনের হারকে তাৎক্ষণিক ত্বরণ বলে।

অসম দ্রুতি

দ্রুতির মান পরিবর্তনশীল হলে অর্থাৎ বিভিন্ন সময়ে দ্রুতির মান বিভিন্ন হলে তাকে অসম দ্রুতি বলে।

গড় বেগ

যেকোনো সময় ব্যবধানে বস্তুর গড়ে প্রতি একক সময়ে যে সরণ হয় তাকে বস্তুটির গড় বেগ বলে।

তাৎক্ষণিক বেগ

সময় ব্যবধান শূন্যের কাছাকাছি হলে সময়ের সাথে বস্তুর সরণের হারকে তাৎক্ষণিক বেগ বলে।

সরণ

কোনো গতিশীল বস্তু নির্দিষ্ট দিকে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাই হলো ঐ বস্তুর সরণ।

গতি

পারিপার্শ্বিকের সাপেক্ষে সময়ের সাথে কোনো বস্তুর অবিরত স্থান পরিবর্তন করাকে বস্তুর গতি বলে।

বেগ

নির্দিষ্ট দিকে সময়ের সাথে কোনো বস্তুকণার সরণের পরিবর্তনের হারকে বেগ বলে।

ত্বরণ

নির্দিষ্ট দিকে সময়ের সাথে কোনো বস্তুর বেগের পরিবর্তনের হারকে ত্বরণ বলে।

দ্রুতি

কোনো গতিশীল বস্তু একক সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে তার দ্রুতি বলে।

সমদ্রুতি

দ্রুতির মান যদি সবসময় সমান থাকে তবে তাই সমদ্রুতি।

সুষম বেগ

কোনো বস্তু যদি নির্দিষ্ট দিকে সমান সময়ে সমান পথ অতিক্রম করে তাহলে ঐ বস্তুর বেগই সুষম বেগ।

গতির সমীকরণ

গতি বিষয়ক সংকেতগুলোকে যে সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়, তাই গতির সমীকরণ।

রৈখিক বেগ

রৈখিক পথে নির্দিষ্ট দিকে কোনো একটি বস্তুর প্রতি সেকেন্ডের রৈখিক সরণকে রৈখিক বেগ বলে।

প্রাস বা প্রক্ষেপক

কোনো একটি বস্তুকে অনুভূমিকের সাথে তীর্যকভাবে উলম্বতলে শূন্যে নিক্ষেপ করা হলে তাকে প্রাস বা প্রক্ষেপক বলে।

প্রাসের বিচরণকাল

উৎক্ষেপণ মুহূর্ত থেকে যে সময় পর কোনো প্রাস প্রসঙ্গ সমতলে অর্থাৎ, নিক্ষেপণ বিন্দুগামী অনুভূমিক সমতলে ফিরে আসে তাকে প্রাসের বিচরণকাল বলে।

নিক্ষেপণ বেগ

যে আদিবেগে কোনো একটি বস্তুকে উপরের দিকে নিক্ষেপ করা হয়, সেই বেগকে নিক্ষেপণ বেগ বলে।

নিক্ষেপণ বিন্দু

যে বিন্দু হতে একটি বস্তুকে উপরের দিকে নিক্ষেপ করা হয় সেই বিন্দুকে নিক্ষেপণ বিন্দু বলে।

অনুভূমিক পাল্লা

প্রাস বা নিক্ষিপ্ত বস্তু নিক্ষেপের পর থেকে ভূমিতে ফিরে আসতে যে সময় নেয়, এই সময়ে অনুভূমিক দিকে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তাকে অনুভূমিক পাল্লা বলে।

প্রাসের উড্ডয়নকাল

নিক্ষেপণের পর প্রাসটি যতক্ষণ শূন্যে অবস্থান করে সেই সময়কে প্রাসটির উড্ডয়নকাল বলে।

পড়ন্ত বস্তুর ১ম সূত্র

স্থির অবস্থান থেকে এবং একই উচ্চতা থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত সকল বস্তু সমান সময়ে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে।

পড়ন্ত বস্তুর দ্বিতীয় সূত্র

স্থির অবস্থান থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত বস্তুর নির্দিষ্ট সময়ে প্রাপ্ত বেগ ঐ সময়ের সমানুপাতিক।

পড়ন্ত বস্তুর তৃতীয় সূত্র

স্থির অবস্থান থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত বস্তু নির্দিষ্ট সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তা ঐ সময়ের বর্গের সমানুপাতিক।

সুষম বৃত্তীয় গতি

কোনো বস্তু কণা সমদ্রুতিতে কোনো বৃত্তাকার পথে সুষম দ্রুতিতে ঘুরতে থাকলে তারগতিকে সুষম বৃত্তীয় গতি বলে।

বৃত্তীয় গতি

বৃত্তাকার পথে ঘূর্ণায়মান কোনো বস্তুর গতিকে বৃত্তীয় গতি বলে। বৃত্তীয় গতি বলে।

কৌণিক সরণ

কোনো বস্তু কোনো বিন্দুতে কেন্দ্র করে ঘুরার সময় যে কৌণিক দূরত্ব অতিক্রম করে তাই উক্ত বস্তুর কৌণিক সরণ।

অসমবৃত্তীয় গতি

অসমকৌণিক বেগবিশিষ্ট গতিকে অসমবৃত্তীয় গতি বলে।

কৌণিক ত্বরণ

সময় ব্যবধান শূন্যের কাছাকাছি হলে সময়ের সাপেক্ষে বস্তুর কৌণিক বেগের পরিবর্তনের হারকে কৌণিক ত্বরণ বলে।

কৌণিক বেগ

সময় ব্যবধান শূন্যের কাছাকাছি হলে সময়ের সাপেক্ষে বস্তুর কৌণিক সরণের পরিবর্তনের হারকে কৌণিক বেগ বলে।

Leave a Reply