ভ্যানডার ওয়ালস আকর্ষণ বল

ডাচ বিজ্ঞানী জে ভ্যান্ডার ওয়াল্স সর্বপ্রথম যে বিশেষ ধরনের দুর্বল আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বলের অস্তিত্ব প্রমাণ করেন যাকে ভ্যানডার ওয়াল্স আকর্ষণ বল বলে।

বন্ধন শক্তি

যে শক্তির দরুণ অণুতে পরমাণুসমূহ আবদ্ধ থাকে তাকে বন্ধন শক্তি বলে।

আয়নিক বন্ধন

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অণু গঠনকালে এক পরমাণুর বহিঃস্তর থেকে অপর পরমাণুর বহিঃস্তরে এক বা একাধিক ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়ে যথাক্রমে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়ন সৃষ্টির মাধ্যমে উভয় পরমাণুর মধ্যে সৃষ্ট স্থিরবিদ্যুৎ আকর্ষণ শক্তির দ্বারা যে বন্ধন গঠিত হয় তাকে আয়নিক বন্ধন বলে।

একক বন্ধন

নিস্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে প্রত্যেকে একটি করে ইলেকট্রন সরবরাহ করে দুটি পরমাণু একজোড়া ইলেকট্রন শেয়ার করে যে সমযোজী বন্ধন গঠন করে তাই একক বন্ধন।

সমযোজী বন্ধন

অণু গঠনের সময় দুটি পরমাণু নিজ নিজ বহিঃস্তরে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের স্থিতিশীল ইলেকট্রন কাঠামো অর্জনের উদ্দেশ্যে যদি সমান সংখ্যক ইলেকট্রন সরবরাহ করে এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় সৃষ্টি করে এবং উভয় পরমাণু তা সমানভাবে শেয়ার করে পরমাণুদ্বয়ের মধ্যে যে বন্ধন গঠিত হয় তাকে সমযোজী বন্ধন বলে।

ত্রিবন্ধন

অষ্টক পূর্ণতার জন্য প্রত্যেকে তিনটি করে করে ইলেকট্রন সরবরাহ করে দুটি পরমাণু তিন জোড়া ইলেকট্রন শেয়ার করে যে সমযোজী বন্ধন গঠন করে তাকে ত্রিবন্ধন বলে।

অণু

মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যাতে ঐ পদার্থের সবগুণ বজায় থাকে তাই অণু।

স্থিতিস্থাপক বল

স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগের ফলে যদি বস্তুর আকার-আকৃতির বিকৃতি ঘটে এবং বল অপসারণের ফলে বস্তুটি পূর্বের আকার ফিরে পায় সেই বলকে স্থিতিস্থাপক বল বলে।

স্থিতিস্থাপক বিভব শক্তি

বাহ্যিক বল অপসারিত হলে কোনো বস্তু তার আগের আকার ফিরে পায় এবং এতে সঞ্চিত যে বিভব শক্তি তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয় তাই স্থিতিস্থাপক বিভবশক্তি।

স্থিতিস্থাপকতা

বল প্রয়োগে যদি কোনো বস্তুর আকার বা আয়তন বা উভয়ের পরিবর্তন ঘটে অর্থাৎ বস্তু বিকৃত হয় তাহলে প্রযুক্ত বল সরিয়ে নিলে যে ধর্মের জন্য বিকৃত বস্তু পূর্বের আকার ও আয়তন ফিরে পায় তাকে স্থিতিস্থাপকতা বলে।

অসহ পীড়ন

কোনো পদার্থের (বস্তুর) একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত সর্বাপেক্ষা কম যে বলের ক্রিয়ার ফলে কোনো বস্তু ভেঙে বা ছিঁড়ে যায় তাকে ঐ পদার্থের অসহ পীড়ন বলে।

অসহ ভার

সর্বাপেক্ষা কম যে ভার বা ওজনের ক্রিয়ার ফলে কোনো বস্তু ভেঙে বা ছিড়ে যায় তাকে ঐ বস্তুর অসহ ভার বা অসহ ওজন বা অসহ বল বলে।

কৃস্তন বিকৃতি

যদি প্রযুক্ত বাহ্যিক বলের ক্রিয়ায় বস্তুর আয়তন অপরিবর্তিত থেকে কেবলমাত্র এর আকৃতির পরিবর্তন হয় তবে বস্তুর ঐ ধরনের বিকৃতিকে কৃস্তন বিকৃতি বলা হয়।

পীড়ন

বাহ্যিক বল ক্রিয়ার ফলে কোনো বস্তুর দৈর্ঘ্য বা আকার বা আয়তনের পরিবর্তন ঘটলে স্থিতিস্থাপকতার জন্য বস্তুর ভেতর থেকে এ বলকে বাধাদানকারী একটি প্রতিক্রিয়া বলের উদ্ভব হয়। অর্থাৎ বস্তুর একক ক্ষেত্রফলের উপর লম্বভাবে প্রযুক্ত ক্রিয়ামূলক বা প্রতিক্রিয়ামূলক বলের মানকে পীড়ন বলে।

স্থিতিস্থাপক ক্লান্তি

কোনো বস্তু বা তারের উপর ক্রমাগত পীড়নের হ্রাস বৃদ্ধি করলে স্থিতিস্থাপকতা ধর্ম হাস পায়। এর ফলে বল অপসারণের সাথে সাথে বস্তু পূর্বের অবস্থা ফিরে পায় না। কিছুটা দেরী হয়। বস্তুর এই অবস্থাই স্থিতিস্থাপক ক্লান্তি।

স্থিতিস্থাপক সীমা

বাইরে থেকে প্রযুক্ত যে মানের বল পর্যন্ত কোনো বস্তু পূর্ণ স্থিতিস্থাপক থাকে অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি যে বল প্রয়োগ করে বল অপসারণ করলে বস্তুটি পূর্বাবস্থায় ফিরে যায় তাই বস্তুটির স্থিতিস্থাপক সীমা।

আকার বিকৃতি

বাহ্যিক বল প্রয়োগের ফলে যদি কোনো বস্তুর আয়তন অপরিবর্তিত থেকে শুধুমাত্র আকারের পরিবর্তন হয় বা বস্তুটি মোচড় খায়, তবে সংশ্লিষ্ট পরিবর্তনে সৃষ্ট কৌণিক বিচ্যুতিই আকার বিকৃতি।

দৃঢ়তার গুণাঙ্ক

স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর আকার বা ব্যবর্তন পীড়ন ও আকার বা ব্যবর্তন বিকৃতির অনুপাত যে ধ্রুব সংখ্য। তাই দৃঢ়তার গুণাঙ্ক।

পূর্ণ স্থিতিস্থাপক বস্তু

কোনো বস্তুর উপর বাহ্যিক বল প্রয়োগ করে বিকৃত করলে যদি বল অপসারণের পর বস্তুটি পূর্ণভাবে পূর্বাবস্থা ফিরে পায় তবে ঐ বস্তুকে পূর্ণ স্থিতিস্থাপক বস্তু বলে।

হুকের সূত্র

স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর উপর প্রযুক্ত পীড়ন এর বিকৃতির সমানুপাতিক।

স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক

স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোনো বস্তুর পীড়ন ও বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রুব সংখ্যা। এ ধ্রুব সংখ্যাকে বস্তুর উপাদানের স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক বলে।

আয়তন গুণাঙ্ক

স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বস্তুর আয়তন পীড়ন ও আয়তন বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রুব সংখ্যা। এই সংখ্যাই বস্তুর উপাদানের আয়তন গুণাঙ্ক।

পয়সনের অনুপাত

স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোনো বস্তুর পার্শ্ব বিকৃতি ও দৈর্ঘ্য বিকৃতির অনুপাত একটি ধ্রুব রাশি। এই ধ্রুব রাশিকে বস্তুর উপাদানের পয়সনের অনুপাত বলে।

সমরেখ প্রবাহ

কোনো নলের ভেতর দিয়ে প্রবাহী চলাচল করার পর যদি প্রবাহীর গতিশীল বিভিন্ন স্তরগুলো নলের অক্ষের সমান্তরালে থাকে তবে প্রবাহীর সেই গতিই সমরেখ প্রবাহ।

সান্দ্রতা

যে ধর্মের জন্য প্রবাহী এর অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন স্তরের মধ্যকার আপেক্ষিক গতির বিপরীতে (স্পর্শীয়ভাবে) বাধার সৃষ্টি করে তাকে প্রবাহীর সান্দ্রতা বলে।

সান্দ্রতাঙ্ক

নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় প্রবাহীর দুটি স্তরের মধ্যে বেগের নতি একক রাখতে প্রবাহী স্তরের একক ক্ষেত্রফলে যে স্পর্শকীয় বলের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ প্রবাহীর সান্দ্রতাঙ্ক বলে।

পৃষ্ঠটান

কোনো তরল পৃষ্ঠের উপর একটি রেখা কল্পনা করলে রেখাটির উভয় পার্শ্বে প্রতি একক দৈর্ঘ্যে রেখার সাথে লম্বভাবে এবং তরল পৃষ্ঠের স্পর্শক বরাবর যে বল বা টান ক্রিয়া করে তাই পৃষ্ঠটান বা তলটান।

পৃষ্ঠ শক্তি

কোনো একটি তরল তলের ক্ষেত্রফল এক একক বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ কাজ সাধিত হয়, তাকে ঐ তরলের পৃষ্ঠ শক্তি বলে।

স্পর্শ কোণ

কঠিন ও তরল পদার্থের স্পর্শ বিন্দু হতে বক্রাকার তরল তলে অঙ্কিত স্পর্শক কঠিন পদার্থের সাথে তরলের ভিতরে যে কোণ সৃষ্টি করে তাকে উক্ত কঠিন ও তরলের স্পর্শ কোণ বলে।

Leave a Reply